বরগুনায় মাদক মামলায় গ্রেপ্তারের পর দুই আসামিকে থানায় নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। একজনের হাত ভেঙে গেছে ও আরেকজনের গোটা শরীরে দাগ তৈরি হয়েছে যা পিটুনিতে হয়ে থাকে।
আদালতে তোলার পর প্রথমে তাদের কারাগারে পাঠানো হলেও পরদিন একজনের জামিন আবেদন করার পর আইনজীবী নির্যাতনের বিষয়টি বিচারকের নজরে আনে। এরপর বিচারক নির্যাতনের অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামিদের পরিবার জানায়, বরগুনা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিহির কান্তি হালদার সোমবার রাতে বরগুনা পৌরসভার কেজি স্কুল সড়কের সামনে নিজ বাসা থেকে শিশির চন্দ্র সরকারকে ও উপকণ্ঠে ক্রোক এলাকা থেকে মামুন হাওলাদারকে আটক করে।
শিশিরের বড় ভাই তুষার সরকার জানান, মঙ্গলবার ভোরে পাঁচ পিস ইয়াবাসহ শিশিরকে ও ৫১ পিস ইয়াবাসহ মামুনকে আটকের অভিযোগে সদর থানায় মাদক মামলা হয়। মামলায় আটকের সময় বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ভোররাত।
মামুনের শরীরের আঘাতের চিহ্ন
তুষারের অভিযোগ, আটকের পর শিশির ও মামুনকে থানায় নিয়ে রাতভর নির্যাতন চালানো হয়। শিশিরের ডান হাত ভেঙে গেছে। মামুনের সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন আছে। আদালতে হাজির করার আগে শিশিরকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই তার স্বজনদের সঙ্গে দেখা হয়।
মঙ্গলবার শিশির ও মামুনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
মামুনের শরীরের আঘাতের চিহ্ন
শিশিরের কাছে কোনো মাদকদ্রব্য ছিল না দাবি করে তুষার বলেন, ‘ওর কাছে ইয়াবা ছিল না বলেই এভাবে মারধর করা হয়েছে। এরপর পাঁচ পিস ইয়াবা দিয়ে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’
বিষয়টি অস্বীকার করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আটকের সময় দৌড়ে পালাতে গিয়ে শিশির আহত হয়। পরে তাকে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। কাউকে থানায় নির্যাতন করা হয়নি।’
মামুনের আঘাতের চিহ্নের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি কল কেটে দেন।
শিশিরের শরীরের আঘাতের চিহ্ন
আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল ওয়াসিম মতিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি বৃহস্পতিবার দুজনের জামিনের জন্য আজকে আদালতে আবেদন করি। জামিন আবেদনের সঙ্গে তাদের নির্যাতনের চিহ্নের তথ্য-উপাত্ত আদালতে পেশ করি।
‘আদালত শিশিরের জামিন আবেদন গ্রহণ করেছে। তবে জেল কোডের বিধান অনুযায়ী জেল হাসপাতালে মামুনকে চিকিৎসা দেয়ার জন্য আদেশ দিয়েছে। পাশাপাশি স্ব প্রণোদিত হয়ে নির্যাতনের চিহ্নের রহস্য উদঘাটনের জন্য জুডিশিয়াল তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।’