চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে ঘরে ঢুকে গৃহবধূ নওরোজ আফরিন প্রিয়াকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আব্দুল হান্নান নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার বিকেলে উপজেলার রায়শ্রী দক্ষিণ ইউনিয়নের আহাম্মদ নগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন শাহরাস্তি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মান্নান।
গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল হান্নানের বাড়ি আহাম্মদ নগর ছোটপোদ্দার বাড়ি এলাকায়। তিনি সৌদি আরব প্রবাসী। গত মাসে তিনি দেশে এসেছেন।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর প্রিয়াকে হত্যা করা হয়। তিনি দক্ষিণ ইউনিয়নের আহাম্মদ নগর ছোটপোদ্দার বাড়ি এলাকার প্রবাসী ইসমাইল হোসেনের মেয়ে। তার স্বামী কুমিল্লার কাইরুজ্জামান চৌধুরী হৃদয়। তাদের দুই বছরের একটি মেয়ে আছে।
১৭ সেপ্টেম্বর প্রিয়ার মা তাহমিনা সুলতানা রুমি অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় হান্নানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, পাঁচ-ছয় বছর আগে প্রতিবেশী আব্দুল হান্নানের সঙ্গে প্রিয়ার মা তাহমিনার বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। এ ঘটনা জানাজানি হলে হান্নান সৌদি আরব চলে যান। গত মাসে দেশে এসেছেন হান্নান।
স্থানীয়রা জানায়, কয়েকবছর আগে তাহমিনা ও হান্নানকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলেন প্রিয়া। পরে বিষয়টি মামলা পর্যন্ত গড়ায়। তাহমিনার স্বামী ইসমাইল ঘটনাটি জেনে তার সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকটি সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়। এরপর হান্নানও বিদেশে চলে যান।
শাহরাস্তি মডেল থানার পরিদর্শক আসাদুল ইসলাম জানান, হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে না।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মিলন মাহমুদ বলেন, ‘প্রিয়া পাঁচ দিন আগে কুমিল্লা থেকে পবিরারসহ বাবার বাড়ি বেড়াতে আসেন। ঘটনার সময় ঘরে তিনি ও তার মেয়ে ছিলেন। পরে ঘর থেকে প্রিয়ার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।’
এসপি আরও বলেন, ‘বাড়িটি নিরিবিলি এলাকায় ছিল। তবে ঘরের কোনো মূল্যবান জিনিসপত্র চুরির আলামত পাওয়া যায়নি। ঠিক কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
দুর্বৃত্তরা মাকে হত্যা করলেও তার শিশুটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। সে তার মায়ের মরদেহের পাশে বসে কাঁদছিল বলে জানান ওসি।
প্রিয়ার মা বলেন, ‘আমার নাতিন অসুস্থ। ওর জন্য ওষুধ আনতে পাশের বাড়ির এক চিকিৎসকের কাছে যাই। ঘরে এসে দেখি আমার মেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কারা কেন এমন করেছে, আমি কিছুই জানি না।’
প্রিয়ার ভাই পরশ জানায়, ‘পাঁচ দিন আগে দুলাভাইসহ আপু বাড়ি আসেন। কয়েক দিন বেড়ানোর পর দুলাভাই কুমিল্লা চলে যান। আজ সন্ধ্যার পর আমি বাজারে যাই। রাতে শুনি আপুকে কারা যেন হত্যা করেছে।’