পাওনা আদায়সহ ১০ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করার পর রাস্তা অবরোধ করতে গিয়ে পুলিশের লাঠি চার্জের মুখে পড়েছে আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ গ্রাহকেরা। কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
প্রায় ৩০০ গ্রাহক জাতীয় প্রেস ক্লাবে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন শুরু করে। দুপুর ১২টায় বিক্ষোভ সচিবালয়ের দিকে যেতে থাকলে তাদের মৎস্য ভবনের দিকে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ। করা হয় লাঠিচার্জ।
রমনা জোনের সহকারী কমিশনার রাজন কুমার সাহা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ শুরু করে। আমরা তাদেরকে শান্তিপূর্ণভাবেই বলেছি যে, আমরা আপনাদের সহযোগিতা করব। তবে শেষের দিকে তারা ভায়োলেন্ট হয়ে পড়েন।’
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিনিধি পাঠাবেন। আমরা সেই অনুযায়ী যোগাযোগও করেছিলাম। কথা ছিল যে তারা দুজন প্রতিনিধি পাঠাবেন। আমাদের যে ফোর্স ছিল তাদেরকে দিয়ে সচিবালয় থেকে মৎস্য ভবনের দিকে নিয়ে যাই। পরে ওরা মৎস্য ভবনে গিয়ে বসে পড়ে। তখন তাদেরকে সরাতে লাঠিচার্জ করি। আমি নিজেও আহত হয়েছি।’
তবে ভিন্ন কথা বলছেন ই-অরেঞ্জের গ্রাহকেরা। কামরুজ্জামান নামে এক গ্রাহক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা প্রেস ক্লাবের বিক্ষোভ শেষে শান্তিপূর্ণভাবে আগাতে থাকি। কোনোরকম কথা না বলেই পুলিশ আমাদের ওপর লাঠি চার্জ করে।’
Caption
রানা নামে আরেক এক গ্রাহক বলেন, ‘আমাদের ৫০ থেকে ৬০ জন কর্মী আহত হয়েছেন। ১০ জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা নিয়েছেন।’
ই-অরেঞ্জের কয়েকজন গ্রাহককে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্দোলকারীরা। তাদের দাবি, আটককৃতদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে শাহবাগ ও রমনা থানায়।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের এখানে দুজন আটক আছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
তবে ই-অরেঞ্জের কোনো গ্রাহককে আটকের কথা অস্বীকার করেছে রমনা থানা পুলিশ।
গ্রাহকদের দাবিগুলো হলো:
# ই-অরেঞ্জের সঙ্গে যুক্ত ওসি সোহেলের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ভুক্তভোগীদের টাকা অনতিবিলম্বে ফিরিয়ে দিতে হবে।
# ই-অরেঞ্জ যেহেতু অরেঞ্জ বাংলাদেশের সিস্টার কনসার্ন তাই সকল ভুক্তভোগী গ্রাহকদের আর্থিক ক্ষতির দায়ভার অরেঞ্জ বাংলাদেশকে নিতে হবে।
# ই-অরেঞ্জ প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিবর্গ ও জড়িত সকল সরকারি আমলা, কর্তাব্যক্তির বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করত হবে।
# এখন পর্যন্ত দায়েরকৃত সকল মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে উত্পত্তি করতে হবে।
# ই-অরেঞ্জ প্রতারণার মাস্টারমাইন্ড ওসি সোহেলকে অচিরেই দেশে ফিরে আনা আনতে হবে।
# SSLCOMMERZ এ ই-অরেঞ্জ এর কত টাকা আটকে আছে সে সম্পর্কীত তথ্য অনতিবিলম্বে প্রকাশ করে আটকে থাকা টাকাগুলো গ্রাহকদের ফিরিয়ে দিতে হবে।
# ই-তারেঞ্জের বিরুদ্ধে সকল তদন্ত রিপোর্ট অনতিবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে।
# আসামিদের রিমান্ডে নেয়া হলো, কিন্তু কোন রিমান্ড রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি কেন? অনতিবিলম্বে রিমাডে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংবাদ সম্মেলন করে জানাতে হবে।
# অচিরেই ই-ক্যাবকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হোক। সেই সঙ্গে আইনের আওতায় এনে ই-ক্যাবের অসঙ্গতির সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক।
# ই-অরেঞ্জসহ সকল ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে বৈধতা দানকারী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে ভুক্তভোগী সকল গ্রাহকদের ক্ষতির দায়ভার নিয়ে দ্রুত সমস্যা নিষ্পত্তি করতে হবে। সুষ্ঠু সমাধান না আসা পর্যন্ত আসামিদের সকল জামিন আবেদন নাকচ করে দিতে হবে।