বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাকপ্রতিবন্ধীদের ‘ভাষা’ বোঝার উদ্যোগ নেই

  •    
  • ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০৮:৫৫

দেশে ইশারা ভাষা শেখার প্রাতিষ্ঠানিক কোনো প্রতিষ্ঠান না থাকায় বাক্‌প্রতিবন্ধীদের ভাষা বোঝা সাধারণের জন্য কষ্টসাধ্য বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাই পাঠ্যপুস্তকে ইশারা ভাষা অন্তর্ভুক্ত করা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।

দেশে শ্রবণ ও বাক্‌প্রতিবন্ধীদের ইশারা ভাষা শেখানোর তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। হাতে গোনা দু-একটি প্রতিষ্ঠান থাকলেও তাদের অবস্থা নিভু নিভু। এ ক্ষেত্রে নেই কোনো সরকারি সহায়তাও।

এমন বাস্তবতায় আজ (২৩ সেপ্টেম্বর) বিশ্বে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক ‘ইশারা ভাষা দিবস’। তবে বাংলাদেশে আলাদাভাবে প্রতিবছর ৭ ফেব্রুয়ারি পালন করা হয় ‘বাংলা ইশারা ভাষা দিবস’।

বেসরকারি সংস্থা সোসাইটি অফ দ্য ডেফ অ্যান্ড সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজার্সের (এসডিএসএল) হিসাবে দেশে শ্রবণ ও বাক্‌প্রতিবন্ধীর সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ। এর মধ্যে সমাজসেবা অধিদপ্তরের ভাতা পাচ্ছেন প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার জন।

দেশে ইশারা ভাষা শেখার প্রাতিষ্ঠানিক কোনো প্রতিষ্ঠান না থাকায় বাক্‌প্রতিবন্ধীদের ভাষা বোঝা সাধারণের জন্য কষ্টসাধ্য বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাই পাঠ্যপুস্তকে ইশারা ভাষা অন্তর্ভুক্ত করা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।

সেই সঙ্গে ইশারা ভাষা শেখার জন্য বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে সরকারের প্রতি আহ্বান তাদের।

শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিশেষ করে হাত ও বাহু নাড়ানোর মাধ্যমে যোগাযোগ করার পদ্ধতিকে ইশারা ভাষা বলা হয়। যখন কেউ মুখের ভাষায় যোগাযোগ করতে পারেন না, তখনই ইশারার মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৃত্তিকা প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ও প্রতিবন্ধিতা বিশেষজ্ঞ ম. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘দেশে গণমাধ্যমসহ সব প্রায়োগিক ক্ষেত্রে ইশারা ভাষা এখনও চরমভাবে অবহেলিত। এ জন্য সাধারণ মানুষ শ্রবণ ও বাক্‌প্রতিবন্ধীদের ভাষা বুঝতে পারে না।

‘দেশে ইশারা ভাষা শেখার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠান নেই। তাই ইশারা ভাষা ইনস্টিটিউট করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।’

মাহবুবুর রহমান জানান, বিষয়টি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত না থাকায় সাধারণ মানুষ বিষয়টি সম্পর্কে তেমন জানেই না। উন্নত বিশ্বের মতো দেশেও পাঠ্যপুস্তকে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। তা না হলে শ্রবণ ও বাক্‌প্রতিবন্ধীদের ভাষা সাধারণের জন্য কখনোই বোধগম্য হবে না।

একই সুরে কথা বললেন সোসাইটি অফ দ্য ডেফ অ্যান্ড সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ইউজার্সের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও কোষাধ্যক্ষ হাসিবা হাসান জয়া।

তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার কাঠামো শ্রবণ ও বাক্‌প্রতিবন্ধীবান্ধব না। পাঠ্যপুস্তকেও বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত নেই। শ্রবণ ও বাক্‌প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারের কোনো বিশেষ পরিকল্পনাও নেই। ফলে সমাজে শ্রবণ ও বাক্‌প্রতিবন্ধীরা অবহেলিত। তাদের সমাজের মূলধারায় আনতে এবং শ্রবণ ও বাক্‌প্রতিবন্ধীদের ভাষা সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে তাদের ইশারা ভাষা শেখাতে হবে।’

বিশালসংখ্যক শ্রবণ ও বাক্‌প্রতিবন্ধী সরকারি সব সুযোগ-সুবিধার বাইরে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের ভাতা পায় ২ লাখ ৫০ হাজার শ্রবণ ও বাক্‌প্রতিবন্ধী, কিন্তু আমরা নিজস্ব জরিপ করে দেখেছি, এ সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ।

হাসিবা হাসান জানান, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী, নিউরোলজিক্যাল ডিজ-অর্ডার, অটিস্টিকসহ অনেকে ইশারা ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকে। এই বিশালসংখ্যক জনগোষ্ঠী সরকারি সব সুযোগ-সুবিধার বাইরে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনের সময় বাংলা ইশারা ভাষাকে অন্যতম ভাষা হিসেবে স্বীকৃতির ঘোষণা দেন এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ সব টেলিভিশন চ্যানেলে ইশারা ভাষায় সংবাদ উপস্থাপনের নির্দেশ দেন।

২০০৯ সালের ২৬ মার্চ থেকে বেসরকারি টেলিভিশন দেশ টিভি এবং আগস্ট মাস থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) তা চালু করে। এ পর্যন্ত অন্য কোনো টেলিভিশন তাদের সংবাদে ইশারা ভাষার ব্যবহার শুরু করেনি।

পরে ২০১২ সালের ২৬ জানুয়ারি সরকারের আন্ত মন্ত্রণালয় সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ৭ ফেব্রুয়ারিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলা ইশারা ভাষা দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।

এ বিভাগের আরো খবর