বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গ্যাস সংকট কাটাতে দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর চিন্তা

  •    
  • ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০৮:১৯

সিলেট অঞ্চলের ক্ষেত্রগুলোতে খনন করা হচ্ছে নতুন নতুন কূপ। একই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যাওয়া ক্ষেত্র ও কূপগুলোয় আরও গভীরে গ্যাস অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। তবে এ জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত।

দেশে চলমান গ্যাস সংকটে স্থবির হয়ে পড়েছে উৎপাদন ব্যবস্থা। র‌্যাশনিং করা হচ্ছে সিএনজি স্টেশনগুলোতে। আমদানি করা এলএনজিতে মিটছে না চাহিদা।

এ অবস্থায় দেশের প্রচলিত গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উৎপাদন বাড়াতে চায় সরকার। এর অংশ হিসেবে সিলেট অঞ্চলের ক্ষেত্রগুলোতে খনন করা হচ্ছে নতুন নতুন কূপ। একই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যাওয়া ক্ষেত্র ও কূপগুলোয় আরও গভীরে গ্যাস অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এ কাজে দেশীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সকে কাজে লাগাতে চায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় জানায়, যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, সেগুলো শেষ হলে দেশে গ্যাসের উৎপাদন বাড়বে। এতে সংকট কিছুটা হলেও কমবে। তবে যতক্ষণ তা না হচ্ছে, ততক্ষণ ব্যাকআপ হিসেবে থাকবে এলএনজি আমদানি ও তার ব্যবহার।

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জ্বালানি নিরাপত্তা রক্ষা করতে যা যা করা দরকার, সরকার সেটা করছে। আগামীতে জ্বালানি নিরাপত্তা আরও সংহত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ এর যে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন, সেখানে জ্বালানি নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এই নিরাপত্তার জন্য স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। আশা করি, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সব ধরনের সংকট দূর করা সম্ভব হবে।’

তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের দেশীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মাদ আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেশে গ্যাস উত্তোলনে সরকার সর্বশক্তি নিয়োগ করতে চায়। এজন্য বাপেক্সও নিজেকে প্রস্তুত করেছে। সরকারও আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আমরা সহযোগিতা পাচ্ছি।’

জ্বালানি বিভাগের দেয়া তথ্য মতে, সরকার তার নিয়মিত গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদন বাড়াতে চাইছে। এরই অংশ হিসেবে চলমান কূপের পাশাপাশি ওয়ার্কওভার (নতুন ও গভীর) কূপ খনন করা হচ্ছে।

এর বেশির ভাগই সিলেট বিভাগে। বাপেক্সের নতুন তিনটি কূপ থেকে গ্যাসের উৎপাদন বাড়বে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট। তবে এ জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। এ ছাড়া, আরও কয়েকটি কূপ খননের কাজ চলমান আছে। এই সব প্রকল্প শেষ হলে দেশে ক্রমশ বাড়তে থাকা গ্যাসের ঘাটতি কিছুটা কমবে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় জানায়, বর্তমানে গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। এতে খরচ ধরা হয়েছে ১৬৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

এর আওতায় সিলেটের জৈন্তাপুর, বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ গ্যাস ক্ষেত্রে তিনটি নতুন কূপ খনন বা ওয়ার্কওভার করা হচ্ছে। এগুলো হলো সিলেট গ্যাস ক্ষেত্র, কৈলাসটিলা গ্যাস ক্ষেত্র ও বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্র।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে রূপকল্প-২ এর আওতায় এই নতুন গ্যাসকূপ খননের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এটা বাস্তবায়ন করছে সরকারি কোম্পানি বাপেক্স।

সূত্র জানায়, এর মধ্যে সিলেট গ্যাস ক্ষেত্রের ৮ নম্বর কূপের খননকাজ শেষ হবে আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে। কৈলাসটিলা গ্যাস ক্ষেত্রের ৭ নম্বর কূপের খনন শেষ হবে ২০২২ সালের এপ্রিলে ও বিয়ানীবাজার-১ কূপের খনন শেষ হবে আগামী বছরের মাঝামাঝি বা জুন নাগাদ।

বাপেক্স সূত্র বলছে, নির্ধারিত সময়ের ছয় মাস আগেই তাদের প্রকল্প শেষ হবে। ফলে গ্যাসের যে সংকট চলমান আছে, তা অনেকাংশে কমে আসবে।

মন্ত্রণালয় জানায়, এরই মধ্যে ওয়ার্কওভার অপারেশনের কাজ এবং বাপেক্সের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। শেষ হয়েছে দরপত্র ও মালামাল সংগ্রহের কাজ। এখন চলছে দরপত্র মূল্যায়ন, যা প্রায় শেষ পর্যায়ে। শেষ হয়েছে বিদেশি পরামর্শক নিয়োগের কাজও। পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করা হয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরে। বর্তমানে সিলেট-৮ নম্বর কূপের (জৈন্তাপুর এলাকায়) রিগ ফাউন্ডেশন মডিফিকেশন কাজ চলমান আছে। এই কূপের লোকেশেন শ্রীকাইল-৪ কূপ খনন শেষে বিজয়-১৮ রিগ মবিলাইজেশন শুরু হয়েছে।

মন্ত্রণালয় জানায়, গ্যাস সংকট থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলায় রূপকল্প-২ খনন প্রকল্পের আওতায় জকিগঞ্জ-১ অনুসন্ধান কূপ খনন এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি খননের কাজ শুরু হয়। খননের সময়সীমা ঠিক করা হয়েছিল ৩০ সেপ্টেম্বর। কিন্তু এর আগেই এই কূপটির সফল খনন শেষ করে বাপেক্স। এতে ব্যয় হয় ৮৭ কোটি ২২ লাখ টাকা।

এদিকে এরই মধ্যে জকিগঞ্জ-১ কূপে ২ হাজার ৯৮১ মিটার খনন সম্পন্ন করে ৪টি জোনে ডিএসটি সম্পন্ন করেছে বাপেক্স। কূপটির ২ হাজার ৮৭০ মিটার গভীরে ৬৮ বিসিএফ বা বিলিয়ন ঘনফুট বাণিজ্যিক গ্যাসের মজুদ পাওয়া গেছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ আগস্ট জ্বালানি নিরাপত্তা দিবসে জকিগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্রকে দেশের ২৮তম গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণা করে সরকার।

বর্তমানে জকিগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্র এলাকায় জকিগঞ্জ-১ কূপের বিজয়-১২ রিগ ডাউন করে মেইন্যানটেনেন্সের কাজ চলমান আছে এবং এই কাজ শেষে সালদা নদী-২ ওয়ার্কওভারের উদ্দেশ্যে মবিলাইজেশন শুরু হবে।

অন্যদিকে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলায় অবস্থিত ফেঞ্চুগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্রেটির দুইটি কূপ খননের কাজ চলমান আছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

এই কূপ খননে বাপেক্সের নিজস্ব অর্থায়নে ফেঞ্চুগঞ্জ-৩ কূপ এবং ফেঞ্চুগঞ্জ-৪ কূপ ওয়ার্কওভার কার্যক্রম চলছে।

ফেঞ্চুগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্রে বিজয়-১০ রিগের মাধ্যমে ফেঞ্চুগঞ্জ-৪ কূপ ওয়ার্কওভার সম্পন্ন করা হয়েছে এবং জাতীয় গ্রিডে দৈনিক ১০-১২ এমএমসিএফ হারে গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে।

বর্তমানে একই রিগ ফেঞ্চুগঞ্জ-৩ কূপ ওয়ার্ক ওয়ার্কওভারের লক্ষ্যে মবিলাইজেশন সম্পন্ন করে ওয়ার্কওভার কাজ শুরু করা হয়েছে।

এছাড়া সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড (এসজিএফএল)-এর হরিপুর স্ট্রাকচারে সরকারি অর্থায়নে ডিসেম্বর ২০১৩ থেকে ডিসেম্বর ২০২১ মেয়াদকালে ১৭১ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সিলেট-৯ নম্বর কূপ খনন হচ্ছে।

এরই মধ্যে সিলেট-৯ নম্বর কূপটির খনন শেষে গ্যাস গ্যাদারিং পাইপলাইন নির্মাণ করে চলতি মাসের ৩ তারিখ থেকে দিনে ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জালালাবাদ গ্যাস সরবরাহ এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

সম্প্রতি সিলেটের হরিপুর গ্যাস ক্ষেত্রে চারটি স্তরে গ্যাসের অবস্থান চিহ্নিত করেছে বাপেক্স

আরও যা ভাবা হচ্ছে

দেশের চলমান গ্যাস সংকট মোকাবিলা ও ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে আরও কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে বন্ধ হয়ে যাওয়া খনি ও কূপগুলোর আরও গভীরে অনুসন্ধান। একই সঙ্গে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে দেশের হাইপ্রেশার জোনগুলোতে অনুসন্ধান ও উত্তোলন কূপ খনন করা। এইসব কাজে দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী ও কার্যকর করে তোলা হবে।

গ্যাস সংকটের কারণ

বর্তমানে দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা ৪৩০ কোটি ঘনফুট। গত ১৪ সেপ্টেম্বর পেট্রোবাংলা মোট সরবরাহ করে ৩১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস। এর মধ্যে দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে ২৪২ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়া গেছে। চাহিদা ও সরবরাহে ঘাটতি ছিল ১২০ কোটি ঘনফুট।

গত দশকের প্রথম দিকে সরকারের নানা কার্যক্রমে দেশের দৈনিক গ্যাস উৎপাদন বেড়ে ২৭০ কোটি ঘনফুটে পৌঁছেছিল। বর্তমানে তা কমে ২৪০ কোটি ঘনফুটে নেমে এসেছে।

কমছে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন

বর্তমানে দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে দিনে ২৪০ কোটি ঘনফুট গ্যাস মিলছে। জ্বালানি বিভাগের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর গ্যাসের দৈনিক উৎপাদন ২৩০ কোটি ঘনফুটে নেমে আসতে পারে।

নতুন বড় কোনো গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত না হলে ২০২২-২৩ সালে দেশের ক্ষেত্রগুলো থেকে দিনে গ্যাস উৎপাদন ১৮ দশমিক ৪ কোটি ঘনফুট কমতে পারে। ২০২৩-২৪ সালে দৈনিক উৎপাদন ৪৩ দশমিক ৫ কোটি ঘনফুট কমে যেতে পারে। এ সময় শেভরনের অধিকাংশ গ্যাসক্ষেত্রের উৎপাদন বন্ধ হতে পারে। বিকল্প হিসেবে সরকার এলএনজির আমদানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের দিকে এলএনজি থেকে আমদানি করে দৈনিক ২০০ থেকে ২৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস চাহিদা মেটানো হবে বলে সরকারের ধারণা।

দেশে গ্যাসের যত ব্যবহার

সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি বিভাগ এবং বাংলাদেশ তেল-গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) থেকে পাওয়া তথ্যমতে, প্রতি বছর দেশে গ্যাস ব্যবহার হয় গড়ে ১ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ) বা ১০০ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ) থেকে ১ দশমিক ১ টিসিএফ। এর মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৪৩ দশমিক ২৮ শতাংশ, শিল্প কারখানায় ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ, বাসাবাড়িতে ১৫ দশমিক ২৫ শতাংশ, শিল্পকারখানার নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্রে (ক্যাপটিভ পাওয়ার) ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ, সার উৎপাদনে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, সিএনজি স্টেশনে ৪ দশমিক ১৬ শতাংশ, বাণিজ্যিক দশমিক ৭৬ শতাংশ ও চা-বাগানে দশমিক ১০ শতাংশ ব্যবহার হয়।

এ মুহূর্তে গ্যাসের অভাবে প্রায় ২ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। প্রতি ইউনিট গ্যাসে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ গড়ে ৩ টাকা, কয়লায় সাড়ে ৮ টাকা, তেলে (ফার্নেস) ১৪ টাকা ও তেলে (ডিজেল) ২৪ টাকা। সে কারণে বিদ্যুৎ বিভাগ লোকসান কমানোর জন্য গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায়।

গ্যাস সংকটের কারণে মাঝেমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে জ্বলে না গ্যাসের চুলা

দরকার গভীর ও নতুন এলাকায় খনন

বাংলাদেশে যেসব স্থানে গ্যাস পাওয়া গেছে, তা গড়ে ৫ হাজার মিটার গভীরতায়। বিজিএফসিএলের পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্রেও এই স্তর থেকে গ্যাস মিলেছে। এই স্তরের আরও নিচে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য প্রয়োজন ডিপ ড্রিলিং বা মাটির আরও গভীরে খনন।

বাংলাদেশের সরকারি সংস্থা বাপেক্সসহ বিদেশি যেসব কোম্পানি রয়েছে, তাদের রিগগুলো গড়ে ৫ হাজার মিটার খনন করার ক্ষমতা রয়েছে। ৭ হাজার মিটারের বেশি গভীরতায় খনন করতে হলে নতুন রিগ কিনতে হবে বাপেক্সের জন্য। এ ছাড়া রিগ ভাড়া করে ও ঠিকাদার দিয়েও বেশি গভীরতায় খনন করা গেলে গ্যাসের নতুন মজুদের সন্ধান মিলবে বলে অনেকে মনে করেন।

দেশে একমাত্র ভোলায় দুটি গ্যাসক্ষেত্র ছাড়া আবিষ্কৃত সব ক্ষেত্রের ভূ-কাঠামোগত বৈশিষ্ট্য হলো ‘অ্যান্টি ক্লেইন স্ট্রাকচার। ভোলায় আবিষ্কৃত দুটি ক্ষেত্র নতুন বৈশিষ্ট্যের স্ট্র্যাটিগ্রাফিক ভূ-কাঠামোর।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভোলা, বরিশাল হয়ে খুলনা এমনকি রাজশাহী পর্যন্ত এই স্ট্র্যাটিগ্রাফিক স্ট্রাকচারে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। পাবনার মোবারকপুর স্ট্র্যাটিগ্রাফিক স্ট্রাকচারে দেশের ২৭তম গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে।

ভোলা ও পাবনার মোবারকপুর হলো বেঙ্গল বেসিনভুক্ত এলাকা। এসব এলাকার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো দেশের প্রধান নদীগুলোর অববাহিকায় মিলছে গ্যাস। অথচ এসব স্থানে অনুসন্ধান ও উত্তোলন কূপ খননের দৃশ্যমান কোনো কর্মসূচি নেই সরকারের।

ভারতের সরকারি প্রতিষ্ঠান ওএনজিসিও একই ধরনের ভূকাঠামোয় গ্যাস ও তেল পেয়েছে। এটি মোবারকপুর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের স্ট্র্যাটিগ্রাফিক স্ট্রাকচারে ইছাপুরে। এই ভূকাঠামো গোটা উত্তরবঙ্গে রয়েছে। সেখানেও গ্যাস প্রাপ্তির সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে দেশীয় গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে যে পরিমাণ কূপ নতুন নতুন এলাকায় খনন করা দরকার, পেট্রোবাংলা তা করছে না।

প্রস্তুত বাপেক্স

দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান এবং উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড বা বাপেক্স। অনেক সময় প্রতিষ্ঠানটি বেশির ভাগ ক্ষেত্র আবিষ্কার করেও উত্তোলন ও ব্যবস্থাপনার সুযোগ পায় না। এক অজানা কারণে বাপেক্সের আবিষ্কৃত ক্ষেগুলোয় কূপ খনন, উত্তোলন ও ব্যবস্থাপনার কাজ দেয়া হয় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে। প্রশ্ন আছে বাপেক্সের সক্ষমতারও।

তবে বাপেক্সের এমডি মোহাম্মদ আলী নিউজবাংলাকে বলেন, বাপেক্স এখন ৫ হাজার মিটারের বেশি ৭ হাজার মিটার সক্ষমতার রিগ কেনার উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারও এ জন্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। এ ছাড়া বাপেক্স সব ধরনের বিশেষজ্ঞ নিয়োগের কাজ শেষ করেছে।

বিদেশি প্রতিষ্ঠানে কাজ করা অভিজ্ঞ কর্মীদের নিয়োগ দিয়েছে বাপেক্স। একই সঙ্গে অবসরে চলে যাওয়া অভিজ্ঞ বাপেক্স কর্মীদেরও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে ধরে রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘সরকার চায়, বাপেক্সকে শক্তিশালী করে দেশের গ্যাস সংকট মোকাবেলা করতে। আমরা সেই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। এ জন্য সরকারেরও সব ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছি।’

এ বিভাগের আরো খবর