সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলব নিয়ে যাতে কেউ পানি ঘোলা করতে না পারে এজন্য সতর্ক থাকার তাগিদ দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সচিবালয়ে বুধবার সকালে সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর এ কথা বলেন তিনি। এ সময় সাংবাদিক নেতাদের আশ্বস্ত করে তথ্যমন্ত্রী জানান, বিষয়টি তিনি দেখছেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিকরা আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলব নিয়ে কেউ যেন পানি ঘোলা না করতে পারে এবং সরকারের সঙ্গে সাংবাদিকদের হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট করতে না পারে, সেবিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
‘এতে কোনোভাবেই ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ নেই। আমি তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে বিষয়টা দেখছি।’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি
এর আগে তথ্য মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করতে আসেন সাংবাদিক নেতারা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব মো. আব্দুল মজিদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) সভাপতি মুরসালীন নোমানী ও সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান খান।
সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলবের প্রতিবাদে সারা দেশে ২৩ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন সংগঠন।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর দেশের সব প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভের ডাক দেয়া হয়েছে।
গণমাধ্যম ও সরকারের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতেই এটা করা হয়েছে অভিযোগ করে কর্মসূচিতে বলা হয়, এর সন্তোষজনক সমাধান না হলে আন্দোলন চলবে।
গত ১২ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খানসহ ১১ সাংবাদিক নেতার ব্যাংক হিসাব তলব করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা বিএফআইইউ।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান। ছবি: সংগৃহীত
অন্য যাদের হিসাব দিতে বলা হয়েছে তারা হলেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, বিএফইউজের সভাপতি মোল্লা জালাল, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আবদুল মজিদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী ও সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান।
হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি, ট্রানজেকশন প্রোফাইল, শুরু থেকে এখন পর্যন্ত লেনদেনের বিবরণী উল্লেখ করে প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে তাদের কাছ থেকে।
গত বুধবার সংবাদ সম্মেলনে করে এই ১১ নেতা জানান, সাংবাদিকদের মধ্যে ভয়ভীতি ছড়ানোর কৌশল হতে পারে এই আদেশ। সে দিনই রোববার মানববন্ধনের ডাক দেয়া হয়।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই কর্মসূচিতে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোল্লা জালাল বলেন, ‘যেভাবে হিসাব চাওয়া হয়েছে তা নজিরবিহীন। আমরা রাষ্ট্রের কাছে এর ব্যাখা চাই। এর নিরসন চাই। উৎকণ্ঠা দূর করতে হবে।’