মৎস্যজীবীদের স্বার্থেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
মৎস্য অধিদপ্তরে বুধবার ইলিশসম্পদ উন্নয়নসংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটির সভায় এ কথা বলেন তিনি।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘মৎস্যজীবীদের স্বার্থেই মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও অভিযান পরিচালনা করা হয়। জাতীয় স্বার্থ যারা ধ্বংস করতে চাইবে, তাদের বিষয়ে কোনো ধরনের বিবেচনা বা অনুকম্পা দেখানোর সুযোগ নেই।
‘এ ক্ষেত্রে কঠিন থেকে কঠিনতর পদক্ষেপ নিতে আমরা কুণ্ঠাবোধ করব না। দেশের মৎস্যসম্পদ রক্ষায় যত কঠিন হওয়া লাগে, তত কঠিন হতে হবে। কাউকে এ বিষয়ে ছাড় দেয়ার অবকাশ নেই।’
তিনি বলেন, ‘মৎস্য খাতকে কোনোভাবেই ধ্বংস হতে দেয়া হবে না। শেখ হাসিনার নির্দেশনা, নজরদারি ও পৃষ্ঠপোষকতায় মাছে-ভাতে বাঙালির বাংলাদেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
‘মৎস্যসম্পদ রক্ষার মাধ্যমে খাদ্যের চাহিদা পূরণ হচ্ছে, বেকারত্ব দূর হচ্ছে, উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে, গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হচ্ছে এবং দেশের রপ্তানি আয় বাড়ছে।’
টাস্কফোর্সের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, চলতি বছর প্রধান প্রজনন মৌসুমে ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ শিকার বন্ধ থাকবে। এ সময় সারা দেশে ইলিশ আহরণ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুত ও বিনিময়ও নিষিদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
পাশাপাশি ইলিশের প্রজননক্ষেত্রে সব ধরনের মৎস্য শিকার নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ইলিশের নিরাপদ প্রজননের স্বার্থে ও মা-ইলিশ সংরক্ষণে এ কার্যক্রম নেয়া হয়েছে বলে জানায় টাস্কফোর্স।
সাধারণত আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার আগে-পরে প্রায় ১৫ থেকে ১৭ দিনের মধ্যে ইলিশ মাছ ডিম ছাড়ে। তাই এই সময়ে সাগরের নোনা জল ছেড়ে নদীমুখে ছুটে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ।
মা-ইলিশ রক্ষার অংশ হিসেবে প্রতিবছর এ সময়টাতে বেশ কয়েক বছর ধরেই ইলিশ ধরা বন্ধ রেখে আসছে সরকার। মূলত মা-ইলিশ যেন নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়ার সুযোগ পায়, সেটি নিশ্চিত করতেই এ উদ্যোগ। এর ফলে দেশে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণ।