রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে গৃহবধূ তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার মামলায় দুই শিশুর বিচার শুরু হয়েছে।
ঢাকার সপ্তম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার বুধবার বিচার শুরুর আদেশ দেন। পৃথক আদালতে চলছে এ মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১৩ আসামির বিচার।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আফরোজা ফারহানা আহমেদ অরেঞ্জ নিউজবাংলাকে জানান, অভিযোগ গঠনের পর মামলাটিতে দুই শিশুর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য নিতে ৮ নভেম্বর দিন ঠিক করেন বিচারক।
উত্তর বাড্ডায় ২০১৯ সালের ২০ জুলাই ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে আহত করে বিক্ষুব্ধ জনতা। গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। উত্তর বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিজের সন্তানের ভর্তির ব্যাপারে খোঁজ নিতে গিয়ে মর্মান্তিক এ ঘটনার শিকার হন তাসলিমা বেগম রেনু।
এ ঘটনায় ওই দিন বাড্ডা থানায় ৪০০-৫০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন রেনুর ভাগনে নাসির উদ্দিন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল হক ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় মোল্লা, রিয়া বেগম ময়না, আবুল কালাম আজাদ, কামাল হোসেন, মো. শাহিন, বাচ্চু মিয়া, মো. বাপ্পি, মুরাদ মিয়া, সোহেল রানা, আসাদুল ইসলাম, বেল্লাল মোল্লা, মো. রাজু, মহিন উদ্দিন, জাফর হোসেন পাটোয়ারী ও ওয়াসিম আহমেদ।
তাদের মধ্যে জাফর ও ওয়াসিম অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের বিচার শিশু আদালতে করার সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে ১ এপ্রিল প্রাপ্তবয়স্ক ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়েছে ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফাতেমা ইমরুজ ক্ষনিকার আদালতে। তাদের মধ্যে তিনজন কারাগারে এবং বাকি ১০ জন জামিনে মুক্ত রয়েছেন।
সর্বশেষ মামলায় দুই শিশু আসামি জাফর ও ওয়াসিমের বিরুদ্ধে বুধবার অভিযোগ গঠন করেছে আদালত।
আসামিদের মধ্যে ওয়াসিম, হৃদয় ও রিয়া বেগম আদালতে দোষ স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।