বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ই-কমার্স: নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ও আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত

  •    
  • ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৯:৩১

বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, সভায় সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে ই-কমার্স খাতের সুষ্ঠু পরিচালনায় একটি আলাদা নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বা রেগুলেটরি বডি গঠন করা হবে। ভবিষ্যত প্রতারণা বন্ধে এবং প্রতারণা সংঘটিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এর জন্য ডিজিটাল ই-কমার্স অ্যাক্ট নামে একটি স্বতন্ত্র আইন করা হবে।

ই-কমার্স ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে একটি সংস্থা গঠন করবে সরকার। একই সঙ্গে খাতটির সুষ্ঠু পরিচালনায় ডিজিটাল ই-কমার্স অ্যাক্ট নামে একটি স্বতন্ত্র আইন করা হবে। বৃহস্পতিবার থেকেই এসব বিষয়ে কাজ শুরু করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বুধবার ই-কমার্স ব্যবসায় সাম্প্রতিক সমস্যা নিয়ে পর্যালোচনা ও এ-বিষয়ক নীতিনির্ধারণী সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়।

চার মন্ত্রীর উপস্থিতিতে সভা চলে দুই ঘণ্টার বেশি। পরে আলোচনার বিভিন্ন বিষয় ও এ থেকে উঠে আসা সুপারিশ সম্পর্কে ব্রিফিংয়ে তুলে ধরেন বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ।

এ সময় ই-কমার্স খাতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

ব্রিফিংয়ে বাণিজ্যসচিব জানান, সভায় ই-কমার্স খাতে যে প্রতারণা ঘটেছে, তার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নেয়া যায় এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রতারণা বন্ধে করণীয় কী হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এ আলোচনায় অংশীজনদের থেকে কেউ কেউ বলেছেন ই-কমার্স খাত বন্ধ করে দিতে। তবে সর্বসম্মতভাবে আলোচনায় তা বিবেচনায় নেয়া হয়নি। কারণ দেশের ই-কমার্স খাতে এখন তৈরি হয়েছে ক্রমবর্ধমান ও সীমাহীন সম্ভাবনার। দশ-বারোটি প্রতিষ্ঠান জন্য লাখ লাখ উদ্যোক্তা এর দায় বহন করবে কেন?

সচিব জানান, এটা খুবই আশাব্যাঞ্জক যে গত ৪ জুলাই ই-কমার্স খাতের জন্য যে পরিচালন নির্দেশিকা জারি হয়েছে তারপর থেকে এ ধরনের প্রতারণা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। তবে এখন যে ধরনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে তা পরিচালন নির্দেশিকা জারি হওয়ার আগেই ঘটে গেছে।

তপন কান্তি ঘোষ জানান, সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে ই-কমার্স খাতের সুষ্ঠু পরিচালনায় একটি আলাদা নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বা রেগুলেটরি বডি গঠন করা হবে। ভবিষ্যত প্রতারণা বন্ধে এবং প্রতারণা সংঘটিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এর জন্য ডিজিটাল ই-কমার্স অ্যাক্ট নামে একটি স্বতন্ত্র আইন করা হবে।

এর আগে, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় এ বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ অংশ নেন।

এ ছাড়া বৈঠকে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মো. মফিজুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি অনুবিভাগ) এ এস এম সফিকুজজামান। ডিজিটাল ই-কমার্স সেল প্রধান ও ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. হাফিজুর রহমান, উপসচিব মোহাম্মদ সাঈদ আলীসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় ই-কমার্স ব্যবসার বিভিন্ন দিক থেকে আসা অভিযোগ গ্রহণ ও আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ করতে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি ব্যবস্থাপনা রাখা বা সেন্ট্রাল কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম দাঁড় করানো হবে বলে জানানো হয়।

ইতিমধ্যে যাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিষয়ে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ এসেছে। এক্ষেত্রে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ও মানি লন্ডারিং আইনে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তবে ই-কমার্স খাতের সঙ্গে এদুটো আইনের সামঞ্জস্য রাখতে আইনের কয়েকটি জায়গায় সংশোধনী আনতে হবে যার কাজ শিগগিরই শুরু করা হবে।

এছাড়া নিবন্ধন ছাড়া কোন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এখন থেকে আর ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না।

আর আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে এস্ক্র ও সার্ভিস সিস্টেমে সর্বোচ্চ রকম গুরুত্ব দেয়া হবে।

ব্রিফিং শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, দেশে এর আগে যুবক, ডেসটিনিতে যে প্রতারণা ঘটেছে, ই-কমার্স খাতে সংঘটিত ঘটনাগুলো এক রকম নয়। কারণ যুবক-ডেসটিনির পর্যাপ্ত সম্পদ ছিল। ওই সব সম্পদের বিক্রয় মূল্য এখন অনেক বেড়েছে। তা দিয়ে গ্রাহকের পাওনা পরিশোধের একটি সুরাহা হতে পারে। এনিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের আই নিড একটি পর্যালোচনা করে দেখছে। তবে সম্পদ বিক্রয়ের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর যারা কারাগারে রয়েছেন তাদের মুক্তি দিতে হবে। সে বিষয়ে আইন মন্ত্রনালয় আইনি দিকগুলো খতিয়ে দেখছে।

তবে ইভ্যালির ক্ষেত্রে তেমনটি নয়। তাদের সম্পদ নেই। যে টাকা লেনদেন করেছে তা হয়তো তারা অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে নতুবা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক প্রচারণার কাজে খরচ করেছে। ফলে গ্রাহকের টাকা পরিশোধের জন্য তাদের হাতে কোন অর্থ আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কিন্তু গ্রাহকের টাকা পরিশোধের দায়ভার সরকার নেবে না।

ই-কমার্স খাতে উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগ এবং তা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ার দায়ভার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর বর্তায় অর্থমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, দায়ভার বলবো না। দায়িত্ব রয়েছে। দায়িত্ব রয়েছে বলেই মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। তবে আপনাদের মনে রাখতে হবে যে সময়ে এ ধরনের ঘটনাগুলো ঘটেছে সে সময় পর্যাপ্ত ওয়ার্ক করা যায়নি। করোনা পরিস্থিতিতে হাফটাইম কাজ করা সম্ভব হয়নি।

তাছাড়া ই-কমার্স খাত দেশে নতুন হওয়ায় খুব একটা ধারণাও দেশের মানুষের ছিল না। এক সময় আমরা কেউ কল্পনাও করিনি কুরবানির গরু অনলাইনে বেচাকেনা হবে। এখন সেটাও হচ্ছে। ফলে এই অনলাইন মার্কেটিংয়ে এখন অনেক গ্রাহক আসছে, উদ্যোক্তা বাড়ছে এবং কিছু প্রতারণার কাজও সংগঠিত হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সময়ে সময়ে ব্যবস্থা নেয়া শুরু করেছে।

এ বিভাগের আরো খবর