আগামী বছরের ডিসেম্বরেই রেলপথে কক্সবাজার যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। তখন ঢাকা থেকে সরাসরি রেলে কক্সবাজার যাওয়া যাবে।
দোহাজারী-রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে গুনদুম সীমান্ত পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্রাক নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন করে বুধবার সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
রেলমন্ত্রীর আশা, ২০২২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন চালু হবে।
তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার রেললাইন চালুর অপেক্ষায় রয়েছে সারা দেশের মানুষ। ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত এটির নির্ধারিত মেয়াদ ধরা আছে।
‘করোনায় কাজ করতে সমস্যা এবং নির্দিষ্ট সময়ে সরকারি কিছু স্থাপনার জমি পেতে সমস্যার কারণে কাজ কিছুটা দেরি হয়। কাজেই ছয় মাস পিছিয়ে আগামী বছরের ডিসেম্বরে একটি উদ্বোধনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কক্সবাজারের সঙ্গে রেললাইন চালু হলে পর্যটকরা আরও বেশি পরিমাণে এখানে আসতে পারবেন। এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে।’
এ সময় কক্সবাজারের আইকনিক রেল স্টেশনের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও তুলে ধরেন রেলমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এখানে যাত্রীরা এসে থাকতে পারবেন, এমন কি তাদের মালামাল রাখার জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
‘প্রকল্পটি নিয়ে কিছু মামলা রয়েছে যেগুলো পরিবারকেন্দ্রিক, তবে প্রকল্পের স্বার্থে ব্যক্তিগণ জমি স্বতঃস্ফূর্তভাবে দিয়ে দিয়েছেন। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সব কিছু এখন নিষ্পত্তি হচ্ছে।’
ভবিষ্যতে এই রেললাইন ট্রান্স এশিয়ান রেললাইনের সঙ্গে যুক্ত হবে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে মিয়ানমার তাদের অংশ করলে গুনদুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করা হবে।
‘চকরিয়া থেকে মাতারবাড়ি পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মিত হবে। কক্সবাজারে বহুমুখী উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান আছে এবং এখানকার অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হচ্ছে।’
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত একটি আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়ার লক্ষ্যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কাজ করে যাচ্ছেন। সকল সেক্টরে উন্নয়ন হচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সারা দেশে অনেক মেগা প্রকল্পের কাজ চলমান আছে।
‘দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ দশটি মেগা প্রকল্পের মধ্যে একটি।’
পরে নির্মাণাধীন রেললাইন ধরে পরিদর্শন করেন রেলমন্ত্রী।
রেলপথ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এরইমধ্যে প্রায় ৬ কিলোমিটার পথে বসানো হয়েছে রেললাইন। এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে প্রথম পর্যায়ে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার নতুন সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মিত হবে। প্রকল্পটির সার্বিক অগ্রগতি ৬২ শতাংশ।
প্রকল্পটির বাস্তবায়ন হলে কক্সবাজারকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আনাসহ পর্যটকরা সাশ্রয়ী আরামদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণের সুযোগ পাবেন বলে আশা করছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
পাশাপাশি সহজে ও কম খরচে মাছ, লবণ, রাবারের কাঁচামাল এবং বনজ ও কৃষিজ দ্রব্যাদি পরিবহন করা সম্ভব হবে।