স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা বৈঠকের পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
বৈঠক শেষে বুধবার সচিবালয়ে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান পরিষদের তারা। তাদের ১৫ দফা দাবি সরকার মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি তালুকদার মো. মনির বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয়ের নেতৃত্বে আজকের এই বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট এবং আনন্দিত। আমরা আমাদের ৭২ ঘণ্টার যে কর্মসূচি ছিল সেটি প্রত্যাহার করে নিলাম।’
বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান-ট্রাক-প্রাইমুভার পণ্য পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজি মকবুল আহমদ বলেন, ‘আজকের বৈঠকে সকল নেতৃবৃন্দ এবং আমাদের মন্ত্রী মহোদয়সহ আইজি মহোদয় এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ছিলেন। দীর্ঘ এই বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট হয়ে আমাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলাম।’
এর আগে, ১৫ দফা দাবিতে মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে ধর্মঘট শুরু করে ঐক্য পরিষদ। ঘোষণা অনুযায়ী ধর্মঘট চলার কথা বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত। এই ধর্মঘটের ফলে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ভোগান্তির খবর আসছিল।
বুধ্বার বৈঠকে অংশ নেয়ার সময়ই নেতারা জানিয়েছিলেন, দাবি আদায়ের আশ্বাস পেলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেবেন তারা। তাই করলেন।
১৫ দফা দাবির উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের অগ্রিম আয়কর নেয়া যাবে না এবং এ পর্যন্ত নেয়া অগ্রিম আয়কর ফেরত দিতে হবে।
১০ বছর ধরে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানচালকদের লাইসেন্স দেয়া বন্ধ রয়েছে, অবিলম্বে লাইসেন্স দেয়া চালু করতে হবে।
ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সঙ্গে বৈঠক শেষে কথা বলছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘দুই সংগঠনের নেতারা ১৫টি দাবি নিয়ে আমাদের কাছে এসেছিলেন। তারা একটি কর্মসূচিও ঘোষণা করেছিলেন। এতক্ষণ জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, আইজিপি, সড়ক পরিবহন সচিব, নৌমন্ত্রণালয়ে সচিব, বিআরটিএ চেয়ারম্যানসহ কনসার্ন সব মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে বসেছিলাম।
‘আমরা তাদের দাবিগুলো শুনেছি। ১৫টি দাবি তারা যথাযথভাবে আমাদের কাছে উপস্থাপন করেছেন। আমরা যেগুলো তৎক্ষণিকভাবে মনে করেছি এখনই করা উচিত, আমরা বলেছি ব্যবস্থা নিতে। আর যেগুলো মনে করেছি সময় লাগবে সেগুলো আমাদের সচিব মহোদয়রা নোট নিয়েছেন এবং তাদের মন্ত্রণালয় থেকে সেগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা ছিল, সেটির বিষয়ে বিআরটিএ-এর চেয়ারম্যান একটি টাস্কফোর্স গঠন করে যত দ্রুত সম্ভব সেটি সমাধান করবেন। এটা ছিল মূলত ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে। অন্যান্য দাবি যেগুলো ছিল সবগুলো নিয়েই দীর্ঘ আলাপ হওয়ার পরে তারা বলেছেন তারা সন্তুষ্ট এবং কর্মসূচি ওনারা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।’
ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ট্রাক চালক প্রাইমুভার চালক আজকে হয়তো ১০ বছর ধরে একজন চালাচ্ছেন, কিন্তু আজকে তার যে লাইসেন্স সেটি হলো হালকা কিংবা মাঝারি। তাদের দাবি ছিল যারা চালাচ্ছেন তাদের একটি টেস্ট নিয়ে তাদের যেন ভারি যানের লাইসেন্সটা সঙ্গে সঙ্গে দিয়ে দেয়া হয়। তারা অযৌক্তিক কিছু বলেননি।’