ভারতীয় টেলিভিশনের জনপ্রিয় মেগাসিরিয়াল ‘সিআইডি’ দেখেই সিলেটের ওসমানী নগরে ইউসিবি ব্যাংকের এটিএম বুথ লুটের পরিকল্পনা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। লুটের টাকা ডাকাত দলের সদস্যরা জুয়া খেলে শেষ করেন বলেও জানায় ডিবি।
বুথ লুটের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্যগুলো জানান ডিবির যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) হারুন অর রশীদ।
ওসমানী নগর থানার শেরপুর নতুন বাজারে হাজী ইউনুস উল্লাহ মার্কেটের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) লিমিটেডের এটিএম বুথে গত ১২ সেপ্টেম্বর লুটের ঘটনাটি ঘটে। বুথের পাহারাদারদের হাত-পা-মুখ বেঁধে শাবল দিয়ে বুথ ভেঙে ২৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা লুট করে একটি দল।
ডিবি কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ বলেন, এ ঘটনায় ওসমানী নগর থানায় মামলা করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তদন্তে ডিএমপির সাইবার ইউনিটের কাছে সহযোগিতা চায় থানা পুলিশ। এর পর কাজ শুরু করে ডিবি পুলিশ।
তিনি জানান, প্রথমে ঢাকা থেকে নূর মোহাম্মদ নামে এক দর্জিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যে হবিগঞ্জের হাওর এলাকা থেকে শামীম আহম্মেদ ও আব্দুল হালিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, সিরিয়াল দেখে টাকা লুটের এ পরিকল্পনা করা হয়। দলের প্রধান শামীম আহম্মেদ একসময় ওমান থাকতেন। কয়েক বছর আগে দেশে ফিরে আসলেও কোনো কাজ করতেন না। তিনি ‘সিআইডি’ সিরিয়ালের ভক্ত ছিলেন। ওই সিরিয়াল দেখেই তার মাথায় এটিএম বুথ লুটের বিষয়টি আসে।
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘সিসি ক্যামেরায় কালো রংয়ের স্প্রে করা, মুখে কাপড় পেচিয়ে শাবল দিয়ে বুথ ভাঙা, সবই সিরিয়াল দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন তারা।’
লুটের দশ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা এই কর্মকর্তা। বাকি টাকার দিয়ে তারা জুয়া খেলেছেন। লুটের কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, ছুরি, প্লাস ও মাথায় ব্যবহার করা তিনটি কাপড় জব্দ করা হয়েছে। এই দলের আরেক সদস্য জহির এখনও পলাতক।
সাইবার ইউনিটের উপপুলিশ কমিশনার শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘লুট করা টাকা দিয়ে তারা জুয়া খেলেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে। তদন্ত চলছে, সিলেট পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তখন আরও বিস্তারিত জানা যাবে।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোস্তফা তারেক জানান, এ ঘটনার সঙ্গে ব্যাংকের কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। অপরাধীদের গ্রেপ্তার করায় পুলিশকে ধন্যবাদ জানান তিনি।