বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সৈকতে ছবির ফাঁদে পর্যটক

  •    
  • ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০৮:৫৭

পর্যটক জান্নাতুল বলেন, ‘৫২টি ছবির মধ্যে একই ছবি একাধিক ছিল। ২০টি ছবি নিতে চাইলে ওই ফটোগ্রাফার ক্যামেরায় থাকা সব ছবির দাম চেয়ে ধমক দেন।’ 

শেষ বিকেলে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের লাবণী পয়েন্টে ছবি তুলছিলেন ঢাকা থেকে ঘুরতে যাওয়া ফোরকান-জান্নাতুল দম্পতি।

সুন্দর মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দি করার পর ফটোগ্রাফারের সঙ্গে ছবি তোলার সংখ্যা প্রসঙ্গে জানতে চান ফোরকান। তখন কথা-কাটাকাটি হয় তাদের মধ্যে।

ওই ফটোগ্রাফারের সঙ্গেই ছবিগুলো প্রিন্ট করতে যান সৈকতসংলগ্ন একটি দোকানে। ছবি প্রিন্ট করতে গিয়ে ফের কথা-কাটাকাটি হয় তাদের মধ্যে।

সুমন, রাফি, সুরাজসহ সাতজনের একদল যুবক নরসিংদী থেকে ঘুরতে যান সৈকতে। ছবি তোলা শেষে তাদেরও কথা-কাটাকাটি হতে দেখা যায় ফটোগ্রাফারের সঙ্গে।

তাদের মধ্যে একজন বলেন, ‘সকালে আমার সৈকতে গোসল শেষে চার বন্ধু ছবি তুলি। ফটোগ্রাফারের সঙ্গে কথা হয়, ছবিপ্রতি তিন টাকা। তিনি প্রায় এক শ’র কাছাকাছি ছবি তোলেন। এর মধ্যে একই ছবি একাধিকবার ছিল।

‘পরে আমরা সেখান থেকে বাছাই করে ভালো ছবিগুলো নিতে চাইলে তিনি বলেন, বাছাই করে নিলে দাম পড়বে সাত টাকা করে।’

এমন ধরনের ঘটনা হরহামেশা ঘটছে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে। তবে ঝামেলা এড়াতে এ ধরনের হয়রানির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে না পর্যটকরা।

বিষয়টি নিয়ে আরেক পর্যটক জান্নাতুল বলেন, ‘সৈকতে হাঁটছিলাম। এমন সময় একজন ফটোগ্রাফার প্রতি পিস ৫ টাকা করে কয়েকটি ভালো ছবি তুলে দেয়ার প্রস্তাব দেন। তার সঙ্গে একমত হয়ে দর-কষাকষি শেষে ৪ টাকা দরে ছবি তুলি।

‘ছবি তোলা শেষে ওই ফটোগ্রাফার আমাকে জানায় ৫২টি ছবি হয়েছে সব ছবি নিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘৫২টি ছবির মধ্যে একই ছবি একাধিক ছিল। ২০টি ছবি নিতে চাইলে ওই ফটোগ্রাফার ক্যামেরায় থাকা ছবিগুলোর দাম দেয়ার জন্য ধমক দেন।’

পরে দর-কষাকষি করে ৩০টি ছবি নিতে বাধ্য হন জান্নাতুল।

টুরিস্ট পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঝামেলা এড়াতে পুলিশকে অভিযোগ করা হয়নি।’

তবে এ বিষয়ে তদারকি বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সৈকতে বিভিন্ন পয়েন্টে ফটোগ্রাফার রয়েছে প্রায় ৮০০ জন।

শুক্রবার ও শনিবার ছুটির দিনে ফটোগ্রাফারের সংখ্যা আরও বাড়ে। তারা দিনে গড়ে ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা আয় করেন।

কক্সবাজার সবচেয়ে বড় পর্যটন শহর হওয়ায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে।

একটু সুযোগ পেলেই প্রাণভরে নিশ্বাস নিতে ভ্রমণপিপাসুরা দূর-দূরান্ত থেকে কক্সবাজার সৈকতে ছুটে যান। দেশের বাইরে থেকেও সেখানে যান অনেক পর্যটক।

সৈকতের ফটোগ্রাফারদের এমন আচরণ প্রায়ই পর্যটকদের আনন্দ নষ্ট করে। যদিও এ ধরনের হয়রানির ক্ষেত্রে ঝামেলা এড়াতে পুলিশকে জানান না অধিকাংশ পর্যটক।

হয়রানির ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে অবশ্য সৈকতের অধিকাংশ ফটোগ্রাফার তা এড়িয়ে যান।

যারা কথা বলেছেন তারাও দাবি করেন, হয়রানি হয় না।

মো. রুবেল নামের এক ফটোগ্রাফার জানান, তিনি তিন বছর ধরে হিমছড়ি পয়েন্ট সৈকতে ছবি তোলেন। তবে তারা কাউকে হয়রানি করেন না।

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি ও কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ।

সৈকতে নিয়মিত টহল টিমের এক সদস্য জানান, ‘সৈকতে আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি যেসব ঘটনা ঘটে, আমরা হয়তো তার ২০ শতাংশ অভিযোগ পাই।’

হয়রানির শিকার হয়েও অধিকাংশ মানুষ অভিযোগ করেন না এটি স্বীকার করেছেন তিনি।

ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা ও হয়রানি থেকে রক্ষায় প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। হয়রানি কমাতে সব সময় আমাদের আটটি দল সৈকতে নিয়মিত টহল দেয়।

‘শুধু ছবি তোলা নয়, পর্যটককে যেকোনো ধরনের হয়রানি হয়েছে এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়া হয়।’

এ বিভাগের আরো খবর