প্রথম আলোর সাময়িকী ‘কিশোর আলোর’ বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ছাত্র নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুর ঘটনায় ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
রুল জারির বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
তিনি বলেন, ‘আবরার হত্যায় তার বাবা আদালতে এসেছিলেন। তাদের আবেদন শুনে আদালত রুল জারি করেছেন। আবরারের বাবা এ রিট আবেদন করেন। রিটে ৫০ কোটি টাকা কলেজের জন্য এবং বাকি ৫০ কোটি টাকা নাইমুল আবরারের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে চাওয়া হয়েছে।’
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম আব্দুর রউফ।
তিনি জানান, ওই ঘটনায় কলেজের সুনাম ক্ষু্ণ্ন হয়েছে। কারণ কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রথম আলোর সঙ্গে অনুষ্ঠানের যে চুক্তি করে সেখানে কার কী দায়দায়িত্ব সেটি উল্লেখ রয়েছে। সেখানে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থার দায়িত্ব ছিল প্রথম আলোর আয়োজকদের। এ কারণে কলেজ কর্তৃপক্ষকে ৫০ কোটি এবং আবরারের পরিবারকে ৫০ কোটি টাকা দিতে এ রিট করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ১ নভেম্বর ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নাইমুল আবরার রাহাত নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যু হয়। ওই দিন বিকেলে বিদ্যুতায়িত হওয়ার পর আবরারকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
একই বছরের ৬ নভেম্বর নাইমুল আবরারের বাবা মজিবুর রহমান প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক এবং কিশোর আলোর প্রকাশক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
২০২০ সালের ১২ নভেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ ওই ঘটনায় করা মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনে আদেশ দেয়া হয়েছে এরা হলেন মতিউর রহমান, কবির বকুল, শুভাশিষ প্রামাণিক শুভ, মুহিতুল আলম পাভেল, শাহ পুরান তুষার, জসিম উদ্দিন তপু, মোশারফ হোসেন, মো. সুমন ও কামরুল হওলাদার। আসামিদের সবাই জামিনে রয়েছেন।
তবে অপর আসামি কিশোর আলো সম্পাদক আনিসুল হককে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
পরে অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন মতিউর রহমান। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্ট।
২০১৯ সালেই ওই কলেজের সাবেক ছাত্র ওবায়েদ আহমেদ ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট করেছিলেন। তখন আদালত বলেছিলেন, ক্ষতিপূরণের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করতে হবে।