পণ্য সরবরাহ দেরির কারণ চলমান করোনাভাইরাস মহামারি। এই মহামারিতে পণ্য ডেলিভারিতে ইভ্যালির কর্মকর্তারা সময় চেয়েছিলেন। সেই সময় শেষ হয়নি। মালামাল গ্রাহকে দেয়ার বিষয়টি চলমান ছিল এবং অনেক গ্রাহককে এরই মধ্যে টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে।
তাই এমন অবস্থায় কার্যক্রম চালাতে ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল এবং চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের জামিন চেয়েছেন তাদের আইনজীবী। একই সঙ্গে তাদের রিমান্ডে না দেয়ারও আবেদন জানান তিনি।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টা ২৫ মিনিটে ঢাকার মহানগর হাকিম মো. হাসিবুল হকের আদালতে ইভ্যালির দুই কর্মকর্তার রিমান্ড বাতিল করে জামিন চেয়ে শুনানিতে এমন যুক্তি তুলে ধরেন তাদের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম মনিরুজ্জামান আসাদ।
জামিন শুনানিতে তিনি আরও বলেন, ‘দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০/৫০৬ ধারায় এই মামলা হতে পারে না। কারণ, দেশে অতিমারি ও এই প্যান্ডেমিক অবস্থায় পণ্য সরবরাহ করার জন্য আসামিরা সময় চেয়েছিলেন। সে সময় এখনও শেষ হয়নি। আমরা মালামাল দিতে অস্বীকার করি নাই। আমাদেরকে যে টাকা দেয়া হয়েছে আমরা তা ফেরত দিয়ে দেব। উনাদেরকে রিমান্ডে নিয়ে তো অবস্থা আরও খারাপ হবে, কোনো সমাধান পাওয়া যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘তাদের সঙ্গে ব্যবসায়ীক চুক্তি হয়েছে, উনারা সেই অনুযায়ী অন্য কোম্পানির সঙ্গে পণ্যের জন্য চুক্তি করেছেন। করোনায় পণ্য সরবরাহে দেরি হয়েছে। এখানে তো ওনাদের কোনো হাত ছিল না, এ ছাড়া ওনারা তো কোনো চুক্তি বা পণ্য সরবরাহের কথা অস্বীকার করছেন না।’
এ ছাড়া রিমান্ড বাতিল ও জামিন শুনানিতে ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘আমার ক্লায়েন্ট শামীমা নাসরিন গ্রেপ্তারের পর থেকে এক কাপড়ে আছেন। এরই মধ্যে তিন দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। তার একটি মানসিক প্রতিবন্ধী ১৫ বছরের বাচ্চা আছে, সে মা ছাড়া থাকতে পারে না।
‘তার মায়ের কাছে যাব, মা মা বলে আকুতি শুনলে চোখে পানি আসে বিজ্ঞ আদালত; আপনি নিশ্চয়ই বুঝবেন তার বাচ্চাটিন এ সময় মা খুব প্রয়োজন। একজন নারী হিসেবে তার জামিনটা দয়া করে মঞ্জুর করুন।’
জামিন শুনানি চলার সময় আসামি শামীমা নাসরিন তার স্বামী রাসেলের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়।
এ ছাড়া এজলাস কক্ষের বাইরে রাসেলের পিতা আল আহাম্মাদকে উচ্চস্বরে কান্নাকাটি করে হাত নাড়তে দেখা যায়।
পরে পুলিশ তাকে সরিয়ে নেন।
কামরুল ইসলাম চকদার নামের এক মাচেন্টের ধানমন্ডি থানায় করা অর্থ আত্মসাতের মামলায় মঙ্গলবার ইভ্যালির সিইও রাসেলের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি থানা পুলিশের উপপরিদর্শক নাজমুল হুদা।
পরে আদালত তাকে এক দিনের রিমান্ডের আদেশ দেয়।
মো. রাসেল ও শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে চারটি কোম্পানির নামে পণ্য সরবরাহের চুক্তি ভাঙাসহ ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ৫৪২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১৮ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডি থানায় ওই মামলা হয়।