বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অরক্ষিত শাহজালালে নতুন রাডার পেতে আরও দুই বছর

  •    
  • ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৮:৫২

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৩০ বছরের পুরনো রাডারটি কার্যক্ষমতা হারিয়েছে অনেক আগে। এটি দিয়ে আকাশপথে ঠিকমতো নজরদারি চালানো যায় না। দেশের প্রত্যন্ত এলাকার দিয়ে কোনো আকাশযান উড়ে গেলে তা জানতে পারছে না বাংলাদেশ। এতে আকাশপথের সার্বভৌমত্ব ঝুঁকির মুখে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

দেশের আকাশপথের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হবে আরও অন্তত দুই বছর। সরকার বলছে, আকাশপথে নজরদারি ও নেভিগেশন প্রযুক্তি আধুনিকায়নে ফ্রান্স থেকে যে রাডার কেনার কথা ছিল, সেটি অল্প কিছু সময়ের মধ্যে তৈরি করবে থ্যালাস নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

এটি তৈরি প্রক্রিয়া শেষ হতে পারে ২০২৩-২৪ সাল নাগাদ। এরপরেই এটি স্থাপন করা হবে দেশের প্রধান বিমানবন্দর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাডারের ব্যাপারে আমাদের অ্যাগ্রিমেন্ট হয়েছে, সব কিছুই চূড়ান্ত হয়েছে। থ্যালাসের সাথে চুক্তি হয়েছে। ওয়ার্ক অর্ডারও হয়েছে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।

‘রাডার তারা তৈরি করে দেবে। আমরা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি। রাডার স্থাপন করা হবে নতুন টার্মিনালের পাশে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের বছর দুয়ের সময় লাগবে। তারা এটা তৈরি করে তারপর আমাদের দেবে। এখন তৈরির কাজ প্রায় শুরুর পথে। আমরা এরই মধ্যে সবগুলো প্রক্রিয়া শেষ করে এনেছি। অ্যাগ্রিমেন্ট ও প্রাইজ নেগোসিয়েশনও শেষ হয়েছে।

‘এখন শুধু তৈরি বাকি। আশা করছি, দুই বছরের মধ্যে এটি তৈরি শেষ হবে। ২০২৩-২৪ সালের মধ্যে এটি এখানে স্থাপন করা হবে বলে আমরা আশা করছি।’

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যে রাডার রয়েছে, এটি কার্যক্ষমতা হারিয়েছে অনেক আগে। প্রায় ৩০ বছর আগে স্থাপন করা এ রাডার দিয়ে আকাশপথে নজরদারি চালাতে হিমশিম খেতে হয় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাকে। তার ওপর সুন্দরবন ও পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু অঞ্চল ও বঙ্গোপসাগরে নতুন নিয়ন্ত্রণে আসা বিস্তীর্ণ এলাকা এর আওতার বাইরে থাকায় সে এলাকায় কোনো আকাশযান উড়ে গেলে তা জানতে পারছে না বাংলাদেশ। এতে আকাশপথের সার্বভৌমত্ব ঝুঁকির মুখে পড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ ছাড়া নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা দেশের আকাশসীমায় কোনো আকাশযান চলাচল করলে তা থেকে রাজস্বও আদায় করতে পারছে না সরকার। এসব এলাকায় রাডার কাভারেজ দিয়ে আয় করছে ভারত ও মিয়ানমার। ফলে বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

এয়ারলাইন্সগুলো বলছে, পুরনো রাডার দিয়ে সব ক্ষেত্রে সেবা নিশ্চিত করতে পারছে না বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

এভিয়েশন অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন যে রাডারটা আছে, এটা অত্যন্ত পুরনো। বারবার মেরামত করে এটি চালানো হচ্ছিল। আরও অন্তত ১০ থেকে ১৫ বছর আগেই এটা পরিবর্তন করা প্রয়োজন ছিল।

‘নতুন রাডারের সাথে নতুন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলও আসবে। এটি হলে এয়ারলাইন্সগুলোর সেবা প্রাপ্তি আরও সহজ ও নিরাপদ হবে।’

সারাবিশ্বে এখন ড্রোন দিয়ে অন্য দেশের উপর নজরদারির প্রবণতা বাড়ছে। শাহজালালে থাকা রাডারটি পুরাতন প্রযুক্তির হওয়ায় দেশের আকাশসীমায় নিচু দিয়ে উড়ে যাওয়া কোনো আকাশযান বা ড্রোন সনাক্ত করা যাচ্ছে না। এতে দেশের নিরাপত্তাও ঝুঁকির মুখে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। নতুন রাডার কাজ শুরু করলে এ সংকট আর থাকবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।

তিনি বলেন, ‘এটা এলে আমাদের টেরিটোরিয়াল ওভারফ্লাইং চার্জ আমরা আরোপ করতে পারব। আমাদের টেরিটরির বাইরের অনেক অংশেও আমরা নজরদারি চালাতে পারব। রাডারের যে কাজ, বিশেষ করে বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে নেভিগেশন দেয়া, সেটিতেও আধুনিকায়ন আসবে।

‘ড্রোন দিয়ে যদি কেউ আমাদের এখানে নজরদারি চালাতে চায় বা অনুনোমোদিত ড্রোন ঢুকে পড়ে, সেগুলো এখানে ধরা পড়বে। আকাশপথের নিরাপত্তা ও ঝুঁকির সব ক্ষেত্রে আমরা পূর্ণ নজরদারি চালাতে পারব। ড্রোনের চেয়ে ক্ষুদ্র কিছু দিয়ে নজরদারি চালালেও আমরা এটি সনাক্ত করতে পারব।’

এর আগেও একবার রাডার প্রতিস্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিল বেবিচক। ২০১২ সালে সরকারি-বেসরকারি মালিকানার ভিত্তিতে রাডার প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমতি দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। অনুমোদনের পর ২০১৫ সালে দরপত্রও চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু নানা জটিলতায় বাতিল হয়ে যায় সে উদ্যোগ।

এ বিভাগের আরো খবর