দেশের ৬৮টি কারাগারে ১৪১ পদের বিপরীতে ১১২ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বাকি ২৯ জন চিকিৎসক দ্রুত নিয়োগ দিতে বলেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মৌখিকভাবে মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়।
রিটের পক্ষের আইনজীবী জে আর খান রবিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১৪১ পদের বিপরীতে আদালতের নির্দেশে ১১২ জন নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। তবে এর মধ্যে আগে ছিল ২৪ জন। বাকি ২৯ জনকে দ্রুত নিয়োগ দিতে মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রতিবেদন দেয়া হয়। সেটা আজ আদালতে জমা দেয়া হয়।’
আদালতের নির্দেশের পরও কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগ না দেয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও কারা অধিদপ্তরের ডিজিকে গত ৭ মার্চ আইনি নোটিশ দেন রিটকারী আইনজীবী জে আর খান রবিন।
নোটিশে বলা হয়, দেশের ৬৮টি কারাগারে ৪০ হাজার ৬৬৪ কারাবন্দির ধারণক্ষমতা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে এর চেয়ে ২-৩ গুণ বেশি বন্দি কারগারে অবস্থান করেন।
অন্যদিকে ১৪১টি কারা ডাক্তারের পদের বিপরীতে ডাক্তার ছিল ৯ জন। এতে করে কারাবন্দিদের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন জনস্বার্থে একটি রিট করেন।
ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ২৩ জুন বিচারপতি এ এফ এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করে। রুলে কারাবন্দিদের বাসস্থান ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের ব্যর্থতাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চায় এবং কারা কর্তৃপক্ষকে সার্বিক বিষয়ে আদালতকে অবহিত করার নির্দেশ দেয়।
পরে কারা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন তারিখে হলফনামার মাধ্যমে দেশের সব কারাগারে ২৪ জন ডাক্তার থাকার বিষয়ে নিশ্চিত করে, সঙ্গে অবশিষ্ট খালি ১১৭টি পদে ডাক্তার নিয়োগের ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় আদেশ চান। এর ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি হাইকোর্ট অনতিবিলম্বে শূন্যপদে ১১৭ জন ডাক্তার নিয়োগের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে নির্দেশ দেয়।
চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি কারা কর্তৃপক্ষ হলফের মাধ্যমে আদালতকে জানায়, ‘১৪১ পদের বিপরীতে ১২২ জন ডাক্তার দেশের বিভিন্ন কারাগারে নিয়োজিত আছে। তার মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৬, রাজশাহী বিভাগে ১৮, রংপুর বিভাগে ১১, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৭, সিলেট বিভাগে ১৭, খুলনা বিভাগে ১৬, বরিশাল বিভাগে ১০ জন নিয়োজিত আছেন। ১২২ জনের মধ্যে ৭ জন ডেপুটেশনে এবং ১০৫ জন পর্যায়ক্রমে সংযুক্ত আছেন।’
আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন বলেন, ‘একই বিষয়ে গত ৪ মার্চ দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এখনও কারাগারে ১৩৪টি ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে। সেহেতু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি আদালতের আদেশ অনুসারে কারাগারে ডাক্তার নিয়োগ না দেয়ায় আদালতের আদেশ অমান্য করেছেন।
‘একই সঙ্গে কারা কর্তৃপক্ষ ডাক্তার নিয়োগের বিষয়ে সঠিক তথ্য সরবরাহ না করায় তাদের কাজও আদালত অবমাননার শামিল। তাই তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশ দেয়া হয়।’