মৎস্য সম্পদ রক্ষায় বাংলাদেশের জলসীমায় প্রতিবেশী দেশের জেলেদের বিচারণ ঠেকাতে একই সময়ে সাগর অবরোধের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
সোমবার বিকেলে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) নদী-উপকেন্দ্রের গবেষণা ভবন এবং মহিপুর ও আলীপুরে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র উদ্বোধন শেষে এ কথা জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গোপোসাগরে দুই মাস সব ধরণের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময় প্রতিবেশী দেশের জেলেরা তৎপর থাকেন। এ সময়ে তারা বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে অবাধে মাছ ধরে নিয়ে যায়।
‘নির্ধারিত সময়ে মাছ ধরা বন্ধ রাখতে সাগরে প্রতিবেশী দেশ নিয়ে একই সময়ে অবরোধ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে এ বিষয় কথা হয়েছে। এ সমস্যা আর থাকছে না।’
মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই সাগরে সব ধরণের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ‘মৎস্য আহরণ ও বিপণনে সম্পৃক্তদের আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি দিয়ে সহায়তা করছে সরকার। এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সবার সুবিধা নিশ্চিতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ‘ইলিশ উৎপাদন বাড়াতে সরকার ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছে। দেশের কোনো জলাশয় অব্যবহৃত থাকবে না। আন্ধারমানিকসহ যেসব নদীতে আগে ইলিশ ছিল, এখন নেই, কেন নেই তা নিয়ে আমরা গবেষণা করছি।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএফডিসির চেয়ারম্যান কাজী হাসান আহমেদ, সচিব মুহাম্মদ হরুন-অর-রশীদ, বিএফআরআইর প্রকল্প পরিচালক জামাল হোসেন মজুমদার, বিএফডিসির পরিচালক (অর্থ) মঞ্জুর হাসান ভুইয়া, উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম রাকিবুল আহসান, কলাপাড়ার ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহম্মেদ আলী।
বিএফডিসি জানায়, ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে মহিপুরে এবং ১৫ কোটি টাকায় আলীপুরে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। দুটি অবতরণ কেন্দ্রে রয়েছে ৪০ কক্ষের আড়ত ভবন। ১০ হাজার বর্গফুটের একটি করে অকশন শেড। রয়েছে দুই হাজার বর্গফুটের একটি করে প্যাকিং শেড, একটি করে পর্যবেক্ষণ কক্ষ, একটি করে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র, ১০ টন উৎপাদন ক্ষমতার বরফকল, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবন।
এই দুই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র চালু হওয়ায় জেলেরা আহরিত মাছের গুনগত মান পরীক্ষা করে বাজারজাত করতে পারবেন। এছাড়া মিলবে মাছ বাছাইকরণ, গ্রেডিং, পাইকারি বিক্রি এবং প্যাকিং সুবিধা।
যানবাহন চলাচলের জন্য মহিপুরে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮০০ মিটার আরসিসি সড়ক এবং আলীপুরে ৭৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকায় ৪০০ মিটার সড়ক নির্মাণ করা হবে বলে ব্যবসায়ী নেতারা জানান।