করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই মৃত্যু গত ২৭ মের পর সবচেয়ে কম। সে হিসাবে দেশে ১১৬ দিন পর সর্বনিম্ন মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। সে দিন দেশে করোনায় ২২ জনের মৃত্যু সংবাদ দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ১ হাজার ৫৫৫ জনের শরীরে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৮১০ ল্যাবে ২৭ হাজার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ, যা গত ১৯৪ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত ৯ মার্চ পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ১৫ লাখ ৪৪ হাজার ২৩৮ জনের দেহে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৭ হাজার ৪৩১ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে পুরুষ ১১ ও নারী ১৫ জন। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ত্রিশোর্ধ্ব ১, চল্লিশোর্ধ্ব ৩, পঞ্চাশোর্ধ্ব ৯, ষাটোর্ধ্ব ৬, সত্তরোর্ধ্ব ৩ ও অশীতিপর ৪ জন।
বিভাগ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এরপর চট্টগ্রামে ৫, রাজশাহী ৪, খুলনাতে ২, বরিশাল ১, সিলেটে ১, রংপুরে ১ ও ময়মনসিংহে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫৬৫ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ৩ হাজার ১০৬ জন। সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ২৩।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত মার্চ থেকে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার মাস পাঁচেক পর পরিস্থিতি উন্নতির চিত্র দেখা যাচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরেই ধারাবাহিকভাবে কমছে মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা। সেই সঙ্গে কমছে শনাক্তের হার।
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিল, মে, জুন ও জুলাই মাসে পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। একপর্যায়ে তা ৩০ শতাংশও হয়ে যায়। এ অবস্থায় এপ্রিলে লকডাউন ও পরে জুলাইয়ে দেয়া হয় শাটডাউন নামে বিধিনিষেধ। ১১ আগস্ট বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হলেও এরপর থেকে রোগী ও মৃত্যু ধীরে ধীরে কমে আসছে।
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনার ক্ষেত্রে আমরা দেখছি সংক্রমণের ধারাটা নিম্নগামী। করোনা যা পরীক্ষা হচ্ছে, গেল এক সপ্তাহ ধরে করোনা শনাক্তের হার ৫ থেকে ৬ শতাংশের ঘরে। তবে এখনই আমরা বলতে পারব না, এটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
‘সংক্রমণ যখন ৫ শতাংশের নিচে আসবে এবং এটা যদি তিন সপ্তাহ পর্যন্ত একইভাবে চলে, তাহলে আমরা বলতে পারি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।’
আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী ভারতসহ বিভিন্ন দেশে আবার সংক্রমণ বাড়ছে। আমাদের এখনও দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আমার মনে করছি, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসবে। নিয়ন্ত্রণে আসার চার থেকে ছয় সপ্তাহ পরে আবার কিন্তু নতুন ঢেউ আসার আশঙ্কা থাকে।’