বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভারত থেকে টিকা আসার বাধা কাটল

  •    
  • ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৭:৫৯

বাংলাদেশ ভারতীয় কোম্পানি সিরাম থেকে মোট ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকা কিনেছিল। এর মধ্যে গত ২৫ জানুয়ারি প্রথম চালানে ৫০ লাখ টিকা আসার পর জানানো হয়েছিল, প্রতি মাসেই আসবে সম পরিমাণ টিকা। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় চলানে পাঠানো হয় ২০ লাখ টিকা। এরপর ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় তারা আর টিকা পাঠায়নি।

করোনার টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়েছে ভারত। ফলে বাংলাদেশ দেশটির টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে যে টিকা কিনেছিল, তার চালান আসতে আর বাধা নেই। আগামী মাস থেকেই ভারত টিকা রপ্তানি শুরু করতে যাচ্ছে।

দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মানসুক মান্দাভিয়া সোমবার ভারতীয় গণমাধ্যমকে এক ভিডিও বার্তায় এই কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘চতুর্থ প্রান্তিকে অর্থাৎ অক্টোবরে ৩০ কোটির বেশি টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এর মধ্যে উৎপাদন আরও বাড়বে। আরও কিছু উৎপাদন প্রতিষ্ঠান বাজারে আসছে। এসব বিবেচনায় নিয়ে বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে আমরা আমাদের টিকার চাহিদা পূরণ করেও এত বেশি উৎপাদন করতে পারব যে, সারা বিশ্বকেই আমরা সহায়তা করতে পারব। কোভ্যাক্সকেও টিকা দিতে পারব।’

মান্দাভিয়া বলেন, ‘টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক টিকা-শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স এবং প্রতিবেশী দেশগুলোকে প্রাথমিক অগ্রাধিকার দেয়া হবে।’

তবে ভারত সরকারের এই ঘোষণার বিষয়ে কিছুই জানেন না স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম। যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা এই বিষয়টি এখনও জানি না।’

সিরামের টিকার লোকাল এজেন্ট বেক্সিমকো ফার্মার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো জবাব মেলেনি। কোম্পানিটির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা রাব্বুর রেজাকে ফোন করলে তিনি তা গ্রহণ করেননি। পরে এসএমএস পাঠালেও কিছু লেখেননি।

ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মানসুক মান্দাভিয়া। ছবি: সংগৃহীত

তার এই ঘোষণা বাংলাদেশের জন্য খুবই স্বস্তিদায়ক এ কারণে যে সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা টিকার চালান ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় আসতে পারছিল না।

বাংলাদেশ ভারতীয় কোম্পানি সিরাম থেকে মোট ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকা কিনেছিল। এর মধ্যে গত ২৫ জানুয়ারি প্রথম চালানে ৫০ লাখ টিকা আসার পর জানানো হয়েছিল, প্রতি মাসেই আসবে সম পরিমাণ টিকা। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় চলানে পাঠানো হয় ২০ লাখ টিকা। এরপর আর টিকা তারা পাঠায়নি।

এর মধ্যে ভারতে করোনার ব্যাপক বিস্তারের কারণে দেশটি টিকার ক্ষেত্রে নিজের চাহিদাও মেটাতে পারছিল না। বিশ্বজুড়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে টিকা বিতরণে গড়ে উঠা আন্তর্জাতিক জোট কোভ্যাক্সকেও দেশটি টিকা দিতে পারেনি।

আর এই অবস্থায় টিকার চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ সরকার চীনের সঙ্গে চুক্তি করে। সেই সঙ্গে চুক্তির চেষ্টা করা হচ্ছে রাশিয়ার সঙ্গে।

কোভ্যাক্সও ভারতের কাছ থেকে টিকা না পেয়ে পরে মডার্না ও ফাইজারের টিকা পাঠাচ্ছে। এই বৈশ্বিক উদ্যোগ থেকে বাংলাদেশ সাড়ে ১০ কোটি টিকা কিনতে চাইছে।

তবে সিরামের টিকা বাংলাদেশের জন্য সুবিধাজনক এই কারণে যে, এখন পর্যন্ত যত টিকা এসেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে কম দাম এই সিরামেরই।

চীন থেকে সরকার কত দামে টিকা পাচ্ছে, সেই বিষয়টি প্রকাশ করেনি। এর আগে গণমাধ্যমে দাম প্রকাশের পর টিকা কেনা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। সে দাম সিরামের দামের দ্বিগুণের চেয়ে বেশি ছিল।

সিরাম থেকে বাংলাদেশের টিকা কেনার ক্ষেত্রে চুক্তিটি অভিনব। ভারত সরকার যদি ৪ ডলারের কমে টিকা পায়, তাহলে বাংলাদেশ দাম দেবে ভারত সরকারের সমান। অন্যদিকে ভারত সরকার যদি ৪ ডলারের বেশি দামে টিকা কেনে, তাহলে বাংলাদেশ টিকা পাবে ৪ ডলারেই।

ভারত সরকার ডিসেম্বরের মধ্যে তার ৯৪ দশমিক ৪ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের টিকা দিতে চায়। এখন পর্যন্ত এদের ৬১ শতাংশকে কমপক্ষে একটি ডোজ দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদির ওয়াশিংটন সফর শুরু হওয়ার আগে রপ্তানি আলোচনা আবার শুরু হয়েছে।

ওয়াশিংটনে চতুর্ভুজ (কোয়াড) দেশের শীর্ষ নেতাদের একটি বৈঠকে টিকা নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। কোয়াডের সদস্য দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া।

এপ্রিল থেকে ভারতের মাসিক টিকা উৎপাদন দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। আগামী মাসে সেটি চারগুণ বেড়ে ৩০ কোটি ডোজে পৌঁছাবে।

ভারত রপ্তানি বন্ধ করার আগে প্রায় ১০০টি দেশে ৬ দশমিক ৬ কোটি ডোজ দান বা বিক্রি করেছিল বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

এ বিভাগের আরো খবর