বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এক সড়কের জন্য দুর্ভোগে দুই উপজেলার মানুষ

  •    
  • ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৭:৪৩

হবিগঞ্জ-ইকরাম আঞ্চলিক সড়কটি জেলা শহরের সঙ্গে বানিয়াচং উপজেলার একাংশের একমাত্র ও কিশোরগঞ্জ জেলার অস্টগ্রাম উপজেলার একাংশের অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন কয়েক শ যানবাহন চলাচল করে। এ ছাড়া পণ্যবাহী যান চলে এ সড়ক দিয়ে।

হবিগঞ্জ-ইকরাম মাত্র ১৮ কিলোমিটারের একটি সড়কের জন্য ১০ বছর ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন দুই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।

সংস্কারের অভাবে প্রায় ১০ বছর ধরে আঞ্চলিক সড়কটিতে পিচ উঠে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দের। আরসিসি অংশের ঢালাইও উঠে গেছে; সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। বৃষ্টি হলেই এসব গর্তে জমছে পানি। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

তবু ভাঙাচোরা সড়কটি সংস্কারে নেওয়া হচ্ছে না কোনো উদ্যোগ। এতে হবিগঞ্জের বানিয়াচং আর কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ আর ঝুঁকিকে সঙ্গী করেই চলাচল করতে হচ্ছে এই সড়ক দিয়ে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছে, এই সড়কের কিছু অংশ সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। বাকি অংশ সংস্কারের জন্য বরাদ্দের অপেক্ষা করা হচ্ছে।

তবে হবিগঞ্জ সম্মিলিত নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল অভিযোগ করে বলেন, ‘সড়কটি সংস্কারের দাবিতে আমরা পদযাত্রা করেছি। বিভিন্ন বাজার ও পয়েন্টে পথসভা করেছি, কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো কর্ণপাতই করছে না।’

হবিগঞ্জ-ইকরাম আঞ্চলিক সড়কটি জেলা শহরের সঙ্গে বানিয়াচং উপজেলার একাংশের একমাত্র ও কিশোরগঞ্জ জেলার অস্টগ্রাম উপজেলার একাংশের অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন কয়েক শ যানবাহন চলাচল করে। এ ছাড়া পণ্যবাহী যান চলে এ সড়ক দিয়ে।

দীর্ঘ দিন ধরে সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় এখন এটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ১৮ কিলোমিটার সড়কের পুরোটাতেই বড় বড় খানাখন্দে ভরা। আরসিসি অংশে ঢালাই উঠে গিয়ে রড় বের হয়ে গেছে।

স্থানীয়দের দাবি, বৃষ্টি হলে সড়কটির অবস্থা শোচনীয় হয়ে উঠে। গর্তগুলো পানির নিচে তলিয়ে থাকার দুর্ঘটনার শিকার হয় যানবাহন। দীর্ঘ দিন ধরে সড়কটি সংস্কারের জন্য দাবি জানিয়ে আসলেও তা আমলে নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।

সাঙ্গ এলাকার বাসিন্দা আয়ুব আলী বলেন, ‘এই সড়কটি মক্রমপুর, সুজাতপুর, পৈলারকান্দি, নোয়া পাথারিয়া, হিয়ালা, বাল্লা মধুপুর, বিথঙ্গল, পাহারপুর, কাকিয়ারআব্দা, টুপিয়াজুড়ি, সাঙ্গর, সুজাতপুর, রহমতপুর, গানপুর, মাখনিয়া, রায়পুর, আগুয়া, বিয়জপুর, মন্দরী, মুরাদপুর, বাগতলা এবং কিশোরগঞ্জ জেলার কয়েকটি গ্রামসহ লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। তবে সড়কটি দীর্ঘ দিন ধরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে। অথচ সংস্কারের জন্য কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না কেউ।’

ইকরাম বাজারের ব্যবসায়ী সুবিনয় দাস বলেন, “ভাঙা সড়ক দিয়েই ব্যবসার জন্য পণ্য আনতে হয়। অনেক সময় মালবাহী ছোট ছোট গাড়ি গর্তে পড়ে উল্টে যায়। এতে মালামাল নষ্ট হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় আমাদের। এ ছাড়া গাড়ির ঝাকুনির কারণে বিভিন্ন পণ্য ভেঙে যায়। এ সড়কের কারণে ‘গুড়ের লাভ পিঁপড়ায় খাইলায়’।”

বাল্লা মধুপুর গ্রামের বাসিন্দা সজল দাস বলেন, ‘জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে আমাদেরকে জেলা শহরসহ ঢাকা-সিলেট যেতে হয়। প্রসূতি নারীদের নিয়মিত হবিগঞ্জ শহরে ডাক্তার দেখাতে যেতে হয়, কিন্তু এই সড়ক দিয়ে চলাচলের কারণে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় তাদের।’

এই সড়কের সিএনজি অটোরিকশাচালক তারেক মিয়া বলেন, ‘এই মাসেও আমার টমটম তিনবার উল্টাই গেছে। ভাঙা জায়গাত পানি জইম্মা থাকে, যে কারণে ইখান দিয়ে চাক্কা (চাকা) গেলেই গাড়ি উইল্টা যায়গা। এ ছাড়া গাড়ির বিভিন্ন পার্টসও দুই দিন পর পর ভাইঙ্গা যায়।’

এই সড়কের কিছু অংশ সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে জানিয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) হবিগঞ্জ কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘১৮ কিলোমিটার সড়কের ৭ কিলোমিটার সংস্কারের জন্য ৩ কোটি টাকার দরপত্র তৈরি করা হয়েছে। আগামী মাসেই দরপত্র আহ্বান করা হবে। আশা করা যায়, দুই মাসের মধ্যেই সড়কটির কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।’

বাকি ১১ কিলোমিটারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সেই স্থানটিও সংস্কারের জন্য খুব শিগগিরই বরাদ্দ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আশা করছি, এ বছরই এটি একনেকে পাস হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর