বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রাণহানি-সংঘর্ষে শেষ হলো ইউপি-পৌর নির্বাচনের ভোট

  •    
  • ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৬:৪৮

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ভোটের আগেই ৪৪টি ইউপির চেয়ারম্যান পদে ও তিনটি পৌরসভার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় একক প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। সেখানে ভোট হয়েছে অন্য পদগুলোতে। সব পৌরসভায় ভোট হয়েছে ইভিএমে। ইউনিয়ন পরিষদগুলোর মধ্যে ১১টিতে ইভিএমে ভোট হয়।

বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, দুজনের প্রাণহানি ও কিছু প্রার্থীর ভোট বর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ১৬০টি ইউনিয়ন পরিষদ ও ৯টি পৌরসভার নির্বাচন। ভোট শেষে চলছে গণনা।

কেন্দ্রগুলোতে সোমবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ভোটাররা। এর মধ্যে সহিংসতার জেরে কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়।

সহিংসতায় কক্সবাজারে প্রাণ হারিয়েছেন দুইজন। বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তথ্য অনুযায়ী, ভোটের আগেই ৪৪টি ইউপির চেয়ারম্যান পদে ও ৩টি পৌরসভার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় একক প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। সেখানে ভোট হয়েছে অন্য পদগুলোতে।

সব পৌরসভায় ভোট হয়েছে ইভিএমে। ইউনিয়ন পরিষদগুলোর মধ্যে ১১টিতে ইভিএমে ভোট দিয়েছেন ভোটাররা।

কক্সবাজার

জেলার মহেশখালী ও চকরিয়া পৌরসভা এবং মহেশখালী, টেকনাফ ও কুতুবদিয়ার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হয়েছে।

এর মধ্যে মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার দুই কেন্দ্রে সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছে। দুই কেন্দ্রেই সংঘর্ষের পর বন্ধ করা হয়েছে ভোট গ্রহণ।

কুতুবদিয়ার বড় ঘোপ ইউনিয়নের পিলটকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ব্যালট ছিনতাইচেষ্টার সময় দুর্বৃত্তদের ওপর গুলি ছোড়ে পুলিশ। সে সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আব্দুল হালিম। তিনি ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পাঁচজন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জামশেদুল ইসলাম সিকদার।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিতে একজন নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হন তিন নারী।

ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াপাড়া এলাকায় কুতুবজোম দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম আবুল কালাম। তিনি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোশাররফ হোসেন খোকনের সমর্থক বলে খবর পাওয়া গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাই।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি জানান, ভোট চলাকালীন ওই কেন্দ্রে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ কামালের সমর্থকদের সঙ্গে চশমার প্রার্থী মোশাররফ হোসেনের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। সে সময় গুলিবিদ্ধ হন চারজন। হাসপাতালে নেয়ার পথেই মৃত্যু হয় কালামের।

এ ছাড়া অন্য কেন্দ্রগুলোতে ভোট হয়েছে স্বাভাবিকভাবেই।

বাগেরহাট

জেলার ৬৫টি ইউনিয়নে ভোট হয়েছে। এর মধ্যে মোরেলগঞ্জ উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদে দুপুর ১২টার দিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন আহত হন।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী রিপন চন্দ্র দাশ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষের সমর্থকরা আমার ভাইয়ের ওপর হামলা চালিয়েছে।’

এ অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল জব্বার মোল্লা বলেন, ‘আমার জয় নিশ্চিত জেনে তারা নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোল করে দোষ চাপাচ্ছে।’

এই অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের মধ্যে কচুয়া উপজেলার ধোপাখালী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসুদ রানা লালন ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

ফকিরহাট উপজেলার শুভদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিল দেয়া, ব্যালট পেপার ছিড়ে ফেলাসহ এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছেন।

এ ছাড়া চিতলমারী উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের বিভিন্ন কেন্দ্রে সদস্য প্রার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়। কয়েক জায়গায় হাতাহাতিও হয়।

জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাগেরহাটের ৯ উপজেলার ৬৬টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও কচুয়ার রাঢ়ীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্যের ১৩টি পদের সব কয়টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রার্থীরা। তাই ভোট হয়েছে ৬৫টি ইউনিয়নে।

সাতক্ষীরা

জেলার কলারোয়া ও তালা উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হয়েছে। সকালে বৃষ্টি হওয়ায় ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার দেখা গেছে প্রায় সব কেন্দ্রেই।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, অনিয়মের অভিযোগ তুলে কলারোয়ার কয়লা ইউনিয়ন পরিষদের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলাম ভোট বর্জন করেন।

অনিয়ম হওয়ায় কেড়াগাছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করে উপজেলা প্রশাসন।

তালা উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর মক্তব কেন্দ্রে ককটেল ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

আটক ব্যক্তির নাম আজহার হোসেন। তিনি নৌকা প্রতীকের কর্মী বলে জানা গেছে।

এর আগে সকালে শ্রীমন্তকাটি কেন্দ্রের পাশে নৌকার কর্মী-সমর্থকরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নাজমুল কবির জানান, ২১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টিতে ইভিএমে ভোট হয়েছে।

নোয়াখালী

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখলসহ নানা অভিযোগ তুলে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট বর্জন করেছেন পাঁচ চেয়ারম্যান প্রার্থী।

ভোট শুরুর ঘণ্টাখানেক পর নিজ নিজ বাড়ি থেকে সংবাদ সম্মেলন করে তারা ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

তারা হলেন বুড়িরচর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জিয়া আলী মোবারক কল্লোল, জাহাজমারা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রার্থী এটিএম সিরাজ উদ্দিন, চরঈশ্বর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল হালিম আজাদ, সোনাদিয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল ইসলাম মালয়েশিয়া ও নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেরাজ উদ্দিন।

এ উপজেলায় সাতটি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হয়। এর মধ্যে পাঁচটিতে প্রার্থীরা ভোট বর্জন করায় সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের জয় প্রায় নিশ্চিতই।

হাতিয়ার পাশাপাশি ইউপি নির্বাচনের ভোট হয় সুবর্ণচরেও। সেখানে ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট দেন ভোটাররা। ভোটার উপস্থিতি হাতিয়ার চেয়ে সুবর্ণচরেই বেশি দেখা যায়।

কবিরহাট পৌরসভাতেও হয়েছে ভোট। তবে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জহিরুল হক রায়হান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ায় সেখানে কাউন্সিল পদের জন্য ভোট হয়েছে।

ফেনী

জেলার সোনাগাজী পৌরসভায় কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেয়া, প্রার্থীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ভোট।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আবু নাসের অভিযোগ করেন, বাইরে নিরাপত্তা জোরদার থাকলেও কেন্দ্রের ভেতরে একজনের ভোট অন্যজন দিয়েছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর বহিরাগত সমর্থকরা ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা দিয়েছে। একই অভিযোগ ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ইমাম উদ্দিন ভূঁইয়ার।

ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী হিজবুল্লাহ অভিযোগ করেন, তিনি সকালে ২ নম্বর ওয়ার্ডে কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে সরকারদলীয় সমর্থকরা তাকে লাঞ্ছিত করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেন।

এ ছাড়া ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী অভিযোগ করেন, নির্বাচনি কেন্দ্রের ভেতর পরিবেশ ভালো থাকলেও বাইরে সরকারদলীয় সমর্থকরা তার সমর্থকদের ঢুকতে দেয়নি।

এসব অভিযোগ সত্য নয় জানিয়ে সোনাগাজী পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। যাদের কোনো ভোটার নেই তারা এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।’

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, সোনাগাজী পৌরসভার ৯টি কেন্দ্রের ৪৯টি বুথে ভোটাররা ভোট দিয়েছেন।

প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন কক্সবাজারের সাকিবুর রহমান, বাগেরহাটের মামুন আহমেদ, সাতক্ষীরার রফিকুল ইসিলাম শাওন, নোয়াখালীর মোহাম্মদ সোহেল, ফেনীর আরিফুর রহমান ও কুমিল্লার মাহফুজ নান্টু।

এ বিভাগের আরো খবর