বাংলাদেশ চাইলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতিসংঘ সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ঢাকাস্থ জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো।
কূটনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ডিক্যাবের ‘ডিক্যাব টক’-এ জাতিসংঘ দূত রোববার এ কথা জানান।
‘জাতিসংঘ কোনো দেশের নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে না। তবে কোনো দেশের সরকার নির্বাচন-প্রক্রিয়ায় সহায়তা চাইলে জাতিসংঘ তা দিয়ে থাকে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের কোনো সহযোগিতা চাইলে আমরা সেই সহযোগিতা দেব।’
জাতিসংঘ সরকার ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টায় মধ্যস্থতার কোনো উদ্যোগ নেবে কি না, সে বিষয়টি পরিষ্কার করেননি তিনি।
মিয়া সেপ্পো বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠান একান্তই হোস্ট কান্ট্রির স্টেকহোল্ডারদের বিষয়। তারা চাইলে জাতিসংঘ যেকোনো ধরনের সহায়তা করে। কোনো দেশ চাইলেই তাদের নির্বাচনে সহযোগিতা দেয় জাতিসংঘ। সেটা বাংলাদেশেও ঘটতে পারে।’
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বহুল আলোচিত নির্বাচনের আগে জাতিসংঘের বিশেষ দূত হিসেবে রাজনীতি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তিতে মধ্যস্থতায় দুই দফা ঢাকা এসেছিলেন।
কিন্তু সেই সিরিজ সংলাপ সফল হয়নি।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ডিকাবের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত একাধিক প্রশ্নের জবাব দেন জাতিসংঘ দূত মিয়া সেপ্পো।
মতবিনিময়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিষয়েও কথা বলেন সেপ্পো।
আফগানিস্তান ইস্যুর জন্য রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি কিছুটা হলেও চাপা পড়ে গেছে বলে মনে করেন তিনি।
সেপ্পো বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক শর্তসাপেক্ষে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সহায়তা দেবে—এ বিষয়টি নিয়ে কিছুটা ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে। দুটি দেশ মিয়ানমার ও আফগানিস্তান এবার জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে না। তাই তাদের অবস্থা জানা সম্ভব হচ্ছে না।’
রোহিঙ্গা সংকট একই সঙ্গে মানবিক ও রাজনৈতিক সমস্যা বলে মনে করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট একটি জটিল প্রক্রিয়া। এটি কেবল মানবিক সংকট নয়, রাজনৈতিকও। এ সংকট সমাধানে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা রাজনৈতিক মতৈক্যে আসতে পারছে না, যার কারণে এটার রাজনৈতিক সমাধান হচ্ছে না।’