দেশে অর্ধশতাধিক ইউনানি প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স নিয়ে অবৈধ ও নকল ওষুধ তৈরি করছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
নকল ও ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা নিয়ে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় ডিবি।
রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকার বাবুবাজার সুরেশ্বরী মেডিসিন প্লাজার নিচতলার মেডিসিন ওয়ার্ল্ড ও লোকনাথ ড্রাগ হাউস এবং হাজি রানি মেডিসিন মার্কেটের নিচতলার রাফসান ফার্মেসিতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভেজাল ও নকল ওষুধ জব্দ করে সংস্থাটি। ওই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবি দক্ষিণ বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, ‘আমাদের তালিকা অনুযায়ী প্রায় ৫০টির মতো প্রতিষ্ঠান ইউনানি লাইসেন্স নিয়েছে। এগুলো অনেক সময় দেখা যায় বন্ধ থাকে। রাতের আঁধারে কারখানা খুলে তারা মাঝে মধ্যে তাদের কার্যক্রম চালায়। পরে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ওষুধগুলো সারা দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে।’
এসবের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও জানান ডিবির কর্মকর্তা।
এ সময় তিনি জনগণকে সচেতন হয়ে ইনভয়েস দেখে ফার্মেসি থেকে ওষুধ কেনার কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ওষুধ বিক্রির সময় কোম্পানি তাদের ইনভয়েস ফার্মেসিকে দেয়। এতে বোঝা যায়, কোম্পানিটি ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত কি না। ইনভয়েস না দেখাতে পারলে বুঝতে হবে সে ওষুধে ঝামেলা রয়েছে।’
মাহবুব আলম বলেন, ‘শনিবারের অভিযানে তিন সরবরাহকারীসহ প্রচুর পরিমাণে নকল ওষুধ জব্দ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে নকল জন্মনিরোধক পিলও রয়েছে অনেক।’
তিনি বলেন, ‘যারা নকল ওষুধ বিক্রি ও উৎপাদন করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। তাদের বিরুদ্ধে আমরা আরও কঠোর হব। ইউনানি ও হোমিওপ্যাথির লাইসেন্স নিয়ে যারা অবৈধ ওষুধ তৈরি করছে তাদের তালিকা আমরা তৈরি করেছি। তাদের বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা নেব।’
যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা সরবরাহকারী নাকি প্রস্তুতকারী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মিটফোর্ড এলাকায় তারা পাইকারি ওষুধের ব্যবসা করে। সেখান থেকে তারা সারা দেশে ভেজাল ওষুধ সাপ্লাই দেয়। যারা উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত আছে তাদেরও তালিকা করছি।’
ভেজাল ওষুধ তৈরি বন্ধ কেন করা যাচ্ছে না জানতে চাইলে ডিবির এই যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘বন্ধ হচ্ছে না বিষয়টি এমন নয়; এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আছে। আমাদের পাশাপাশি ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরও ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ নাঈম গোলদার বলেন, ‘অভিযানে জব্দ করা ওষুধের বেশির ভাগ হচ্ছে রেজিস্ট্রেশনবিহীন ও নিষিদ্ধ ওষুধ। এ ছাড়া আছে ভেজাল ওষুধ। এর মাঝে একটি ওষুধ হচ্ছে পিডিএকটিন যা অনেক আগেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘যেসব নকল ওষুধ জব্দ করা হয়েছে সেগুলো সেবন করলে মানুষের লিভার ও কিডনির সমস্যা হবে।’