ফেনীর সোনাগাজী পৌরসভার ভোট সোমবার। মেয়র পদের জন্য সেখানে প্রার্থী আছে কেবল আওয়ামী লীগ ও ইসলামী আন্দোলনের। এ কারণে ভোটের মাঠ নিরুত্তাপ, ভোটারদেরও নেই তেমন আগ্রহ।
পৌরসভার একটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন বিএনপি সমর্থিত এক প্রার্থী। সেখানে কিছুটা নির্বাচনি আমেজ দেখা গেছে।
সরেজমিনে শনিবার দেখা গেছে, ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ না থাকলেও প্রার্থীদের শেষ মুহুর্তের প্রচারে সরগরম সোনাগাজী উপজেলা শহর।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাঈনুল হক জানান, ইভিএমে হবে এই পৌরসভার ভোটগ্রহণ। মোট ভোটার ১৫ হাজার ৯৮৫, যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ১২৭; নারী ভোটার ৭ হাজার ৮৫৮।
পৌর মেয়রের পদ পেতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক যুবলীগ নেতা শেখ সেলিম, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু নাছের ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হিজুবল্লাহ।
৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৩ প্রার্থী। এরমধ্যে ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়া অন্যগুলোতে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগেরই লোক। শুধু ৩ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিপরীতে আছেন তিনবারের নির্বাচিত বিএনপির কাউন্সিলর।
সংরক্ষিত মহিলা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চারজন। তার মধ্যে ৪, ৫, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থীরা এরই মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
সোনাগাজী পৌরসভার ভোটার শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘আমরা চাই সুষ্ঠু নির্বাচন। ভোট ডাকাতি বন্ধ হলে ভোটারদের মূল্যায়ন বাড়বে। আর যদি ভোট ডাকাতির প্রবণতা থাকে তাহলে অস্ত্রধারীদের মূল্যায়ন বাড়বে।’
আরেক ভোটার জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বড় দল নেই। মানুষের মধ্যে কোনো আগ্রহ নেই। মেয়র পদে আওয়ামী লীগ জিতবে এটা সবার জানা। বিএনপি-জামায়াত-জাতীয় পার্টি কেউ নেই।’
ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী হাফেজ হিজবুল্লাহ ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে তুলেছেন কিছু অভিযোগ।
তিনি বলেন, ‘সরকার দল কেন্দ্র দখলের পায়তারা শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া ভিন্নমতের লোকদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। যদি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ভরাডুবি হবে।’
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মেয়র পদে আমার সঙ্গে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদের ভোটার ও জনসমর্থন নেই। শুধু শুধু ফাঁকা আওয়াজ।’
কেন্দ্র দখলের প্রয়োজন নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরাও সুষ্ঠু ভোট চাই। মানুষ নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে।’
ফেনীর পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটাতে পারে সেজন্য পুলিশের কঠোর নজরদারী রয়েছে। পৌর শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।’
জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান বলেন, ‘আমরা সব প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে তাদের অভিযোগগুলো শুনেছি। আশা করছি, আগামীকাল সুন্দর, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে।’