বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঢাবি সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে পেছাচ্ছে সশরীরে ক্লাস

  •    
  • ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৯:১৮

স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার পর শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে হলে সব শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া থাকতে হবে-এমন নয়। কেবল নিবন্ধন করাই যথেষ্ট। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সবাইকে টিকা দিয়ে পরে ক্লাস শুরু করবে তারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে সহসাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হওয়ার সম্ভাবনা উবে যাচ্ছে।

সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সব শিক্ষার্থীর টিকা নেয়া শেষ হলেই কেবল তারা সশরীরে ক্লাস নেবে।

এমন সিদ্ধান্ত সরকারের আগেই ছিল। কিন্তু সবাইকে টিকা কবে দেয়া যাবে, এ নিয়ে প্রশ্নের মধ্যে সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, সবাইকে টিকা দিয়ে পরে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা জরুরি নয়। টিকার জন্য সবার নিবন্ধন শেষেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই টিকাকেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।

করোনার প্রাদুর্ভাবে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ বন্ধ হয়ে যাওয়া শিক্ষাঙ্গনে প্রাণ ফিরতে শুরু করে গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে। সেদিন স্কুল ও কলেজে সশরীকে ক্লাস শুরু হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবি আরও আগে থেকে জানিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীরা। স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার পর সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও সচল হয়ে উঠার সম্ভাবনা দেখা দেয়।

এরই মধ্যে চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার জন্য হল খুলে দেয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ৫ অক্টোবর থেকেই খুলবে ছাত্রবাসের বন্ধ দুয়ার।

তবে হলে উঠতে হলে শিক্ষার্থীদের সবাইকে অন্তত প্রথম ডোজের টিকা নিশ্চিত করতে হবে।

শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে সিন্ডিকেটের জরুরি এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।

তবে এই সভাতেই অন্য একটি সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরুর সময় পিছিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সিদ্ধান্তটি হলো, ‘শতভাগ শিক্ষার্থী টিকা কার্যক্রমের আওতায় আসার পরই সশরীরে শ্রেণি কার্যক্রমের তারিখ নির্ধারণ করা হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে টিকার আওতায় আনতে আলাদা নিবন্ধন করা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের উদ্যোগে। তবে কত শতাংশকে টিকার আওতায় আনা গেছে, সে বিষয়ে কোনো সুষ্পষ্ট ধারণা নেই। তবে নিবন্ধন করার এক থেকে দেড় মাসেও টিকার এসএমএস আসছে না। তাই টিকা দেয়া হবে শেষ হবে, সেটি নিশ্চিত করে বলা খুবই কঠিন।

আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশের নানাপ্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকেন। সব জায়গায় যে টিকা কার্যক্রম চলছে এমনটিও না।

শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণার বিপরীতে গিয়ে সবাইকে টিকা দিয়ে কেন ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন- এমন প্রশ্নে সিন্ডিকেট সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্যই টিকার কথা আমরা বলেছি। এই টিকা দেয়ার জন্য আমাদের মেডিক্যাল সেন্টারে টিকার বুথ বসানো হবে।

‘আমাদের যেসব শিক্ষার্থী টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করার পরও এসএমএস পাচ্ছে না, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বুথে রেজিস্ট্রেশন করে টিকা গ্রহণ করতে পারবে। আর যেসব শিক্ষার্থীদের এনআইডি নেই তাদের জন্য তো বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশন একটা অ্যাপস তৈরি করেছেই। আশা করি এই টিকা কার্যক্রম দ্রুত হয়ে যাবে। ফলে সকল শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনা, সকলের জন্য হল খোলা এবং সশরীরে ক্লাস শুরু বিলম্ব হবে না।’

উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান জরুরি এই সিন্ডিকেট সভায় সভাপতিত্ব করেন। প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি ও একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী নানা সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বৈঠকে।

এতে নেয়া অন্য একটি সিদ্ধান্ত হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার এবং বিভাগ ও ইনিস্টিউটের সেমিনার লাইব্রেরিগুলো ২৬ সেপ্টেম্বর খুলে দেয়া হবে।

ক্যাম্পাস ও হল খুলে দেয়ার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: নিউজবাংলা

সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অনার্স চতুর্থ বর্ষ এবং মাস্টার্স-এর যেসকল শিক্ষার্থী অন্তত ‘কোভিড-১৯'-এর প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছে, তারা স্বাস্থ্যবিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রণিত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর অনুসরণ করে টিকা গ্রহণের কার্ড বা সনদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ পরিচয়পত্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেখিয়ে গ্রন্থাগার ব্যবহার ও নিজ নিজ হলে উঠতে পারবে।’

এতে আরও বলা হয়, ‘সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, বিজ্ঞান গ্রন্থাগার ও বিভাগীয় এবং ইনস্টিটিউটের সেমিনার লাইব্রেরিসমূহ ব্যবহার করতে পারবে। সংশ্লিষ্ট আবাসিক শিক্ষার্থীরা ৫ অক্টোবর সকাল ৮টা থেকে নিজ নিজ হলে উঠতে পারবে। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদেরও টিকা গ্রহণের সনদ বা প্রমাণপত্র সঙ্গে রাখতে হবে।’

সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি আবাসিক হল ও একাডেমিক ভবনের দৃশ্যমান জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের নির্দেশিকা সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুনও থাকবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘টিকা গ্রহণ সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে অনার্স ১ম, ২য় ও ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য নিজ নিজ আবাসিক হল খুলে দেয়া হবে। আবাসিক হলগুলোতে আগের মতো ঠাসাঠাসি করে বসবাস করা এবং কথিত কোন ‘গণরুম' রাখা যাবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধুমাত্র নিয়মিত আবাসিক শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করবে।’

এতে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিক্যাল সেন্টারে টিকা কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যেসব শিক্ষার্থী এখনও টিকার নিবন্ধন করেনি, তাদেরকে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিবন্ধন করে টিকা নিতে জন্য বলা হয়েছে।

সভায় হল ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতাও প্রত্যাশা করা হয়।

এ বিভাগের আরো খবর