বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আগস্টে বেক্সিমকোর ৭ কোটি শেয়ার কিনল প্রতিষ্ঠান

  •    
  • ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৭:৫২

গত বছরের জুলাই থেকে পুঁজিবাজারে যেসব কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিকহারে বেড়েছে, তার অন্যতম হলো বেক্সিমকো লিমিটেড। এই সময়ে কোম্পানিটির সর্বনিম্ন দাম ছিল ১৮ টাকা ৮০ পয়সা। গত বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ দর উঠে ১৩৫ টাকা ৫০ পয়সা। দিন শেষে দাম দাঁড়ায় ১৩৫ টাকা ২০ পয়সা।

জুলাই মাসে চার কোটির পর আগস্টে বেক্সিমকো লিমিটেডের প্রায় সাত কোটি শেয়ার কিনল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। দুই মাসে তারা কিনেছে ১১ কোটির কিছু কম।

গত ৩০ জুন অর্থবছর শেষ হওয়ার সময় কোম্পানির যত শেয়ার তাদের হাতে ছিল, এখন আছে তার প্রায় দ্বিগুণ। এর পুরোটাই বিক্রি করেছেন ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীরা।

৩০ জুন শেষে বেক্সিমকোর মোট শেয়ারের ১৩ দশমিক ৬২ শতাংশ ছিল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। সে সময় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ছিল ৫৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ শেয়ার।

আগস্ট শেষে মোট শেয়ারের ২৬.০৯ শতাংশ আছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। জুন শেষে তা ছিল ১৩ দশমিক ৬২ শতাংশ।

প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়ে চললেও কোম্পানিটিতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়া বা কমার ঘটনা ঘটেনি। জুলাই থেকেই তা শতকরা ১.৪৭ শতাংশ রয়ে আছে।

এই দুই মাসে কোম্পানিটির শেয়ারদরও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।

জুলাইয়ে প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ৪ কোটির কিছু বেশি শেয়ার কেনার মাসে বেক্সিমকোর শেয়ারের সর্বনিম্ন দর ছিল ৮৯ টাকা। ওই মাসে সর্বোচ্চ দর ছিল ৯৭ টাকা ৯০ পয়সা।

আগস্টে কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বনিম্ন দর ছিল ৯২ টাকা আর সর্বোচ্চ ছিল ১১১ টাকা ৩০ পয়সা।

তবে সেপ্টেম্বরের অর্ধেক যেতে না যেতে শেয়ার দর দিয়েছে আবার লাফ। এই মাসে সর্বনিম্ন দর ছিল ১১১ টাকা ৩০ পয়সা। আর সর্বোচ্চ দর ১৩৫ টাকা ২০ পয়সা।

বড় মূলধনি কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বেক্সিমকোর দর

গত বছরের জুলাই থেকে পুঁজিবাজারে যেসব কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিকহারে বেড়েছে, তার অন্যতম হলো বেক্সিমকো লিমিটেড।

এই সময়ে কোম্পানিটির সর্বনিম্ন দাম ছিল ১৮ টাকা ৮০ পয়সা। গত বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ দর উঠে ১৩৫ টাকা ৫০ পয়সা। দিন শেষে দাম দাঁড়ায় ১৩৫ টাকা ২০ পয়সা।

এই এক বছরে এর চেয়েও বেশি হারে বেড়েছে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার দর। তবে সেগুলোর সিংহভাগই স্বল্প মূলধনি কোম্পানি। বেক্সিমকোর পরিশোধিত ৮৭৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা।

২০১০ সালের মহাধস শুরুর পর কোম্পানি ব্যাপকহারে দর হারায়। সেই সঙ্গে কমতে থাকে এর শেয়ার প্রতি আয়। ২০১০ সালে শেয়ার প্রতি ৪০ টাকারও বেশি আয় করা কোম্পানিটি গত অর্থবছরে সর্বনিম্ন আয় দেখায় ৫১ পয়সা।

গত এক বছরে বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারের সর্বনিম্ন দর ছিল ১৮ টাকা ৮০ পয়সা, সর্বোচ্চ দর ১৩৫ টাকা ৫০ পয়সা

তবে চলতি অর্থবছরে কোম্পানিটির আয় দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকেই ব্যাপকভাবে বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে এর দাম।

এত বড় মূলধনের কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির পেছনে নানা মূল্য সংবেদনশীল তথ্য কাজ করেছে এই সময়ে।

যুক্তরাষ্ট্রে করোনা সুরক্ষাসামগ্রী (পিপিই) বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ মুনাফা করার পর দুটি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র করার কাজ পাওয়ার ঘোষণায় বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারদরে উত্থান হচ্ছে গত বছরের এপ্রিল থেকে।

কোম্পানিটি যুক্তরাষ্ট্রে বছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকার পিপিই ও অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রী রপ্তানি করবে বলে জানানো হয়েছে। আর এই পিপিই রপ্তানি করেই তাদের আয়ের সিংহভাগ এসেছে।

সম্প্রতি কোম্পানিটি দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে সুকুক বন্ড ছেড়ে তিন হাজার কোটি টাকা তোলার অনুমতি পেয়েছে। বন্ড কিনতে প্রথমে অগ্রাধিকার পেয়েছেন বিদ্যমান শেয়ারধারীরা। তবে তারা খুব একটা আগ্রহ দেখাননি।

৭৫০ কোটি টাকার বন্ড বিক্রি করার পরিকল্পনা থাকলেও বিনিয়োগের জন্য আবেদন পড়েছে ৫৫ কোটি টাকার কিছু বেশি।

বন্ডে বিনিয়োগ করলে প্রতিবছর নিশ্চিতভাবেই ৯ শতাংশ মুনাফা মিলবে। আরও নানা সুযোগ-সুবিধা থাকায় সেটি ১৬ শতাংশের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া সম্ভব। তবে সেটি বিবেচনায় নিচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা; বরং পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক নানা ফেসবুক পেজে এই বন্ড না নিতে লেখালেখি করছেন তারা।

বিনিয়োগকারীরা বিশেষ করে বন্ধ হয়ে যাওয়া জিএমজি এয়ারলাইনসে প্লেসমেন্ট শেয়ারে বিনিয়োগ করে টাকা ফেরত না পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরছেন।

বেক্সিমকোর সুকুক বন্ডে আগ্রহ না দেখালেও কোম্পানিটির শেয়ারে তুমুল আগ্রহ দেখা দিয়েছে। দাম বাড়ার সুযোগ দিয়ে ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীরা তা বিক্রি করছেন, আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কিনেই চলেছেন।

জুলাই ও আগস্ট শেষে শেয়ারের হিস্যা কার কত

গত জুলাই মাসে মোট শেয়ারের ৪.৬ শতাংশ হিসেবে ৪ কোটি ৩ লাখ ১০ হাজার ৬৬৮টি শেয়ার কিনেছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।

আগস্টে তা আরও বেড়েছে। চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের তথ্য অনুযায়ী এই এক মাসে ৬ কোটি ৮৯ লাখ ৬৬ হাজার ২৯৫টি শেয়ার কিনেছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।

শতকরা হিসেবে বেক্সিমকোর শেয়ারের মোট ২৬ দশমিক ০৯ শতাংশ এখন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর হাতে।

জুন শেষে মোট শেয়ারের ১৩ দশমিক ৬২ শতাংশ ছিল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে।

গত তিন মাসে বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারের মালিকানার হিস্যার হিসাবনিকাশ

জুলাই শেষে তা আরও খানিকটা বেড়ে হয় ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ। আগস্টে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর হিস্যা বেড়েছে আরও ৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

কোনো কোম্পানিতে মোট শেয়ারের কত শতাংশ কার হাতে আছে, সেই তথ্য প্রতি মাস শেষে জানাতে হয়।

প্রায়ই দেখা যায়, চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ বা সিএসইসে এই তথ্য আগে প্রকাশ হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইতে এই হিসাব প্রকাশ করতে কিছুটা দেরি করে।

গত মাসেও বেক্সিমকোর শেয়ারের হিস্যার খবর সিএসই আগে প্রকাশ করেছিল। ডিএসইতে তা প্রকাশ হয় পরে।

কার কাছে কত শেয়ার

বেক্সিমকো লিমিটেডের বর্তমানে মোট শেয়ার আছে ৮৭ কোটি ৬৩ লাখ ১৮ হাজার ৮৭৯টি।

শেয়ারের মধ্যে ৩০.৫৫ শতাংশ বা ২৬ কোটি ৭৭ লাখ ১৫ হাজার ৪১৭টি আছে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে, যা জুলাই ও আগস্ট মাসে কোনো পরিবর্তন হয়নি।

গত দুই মাসে ব্যাপকহারে বিক্রি করলেও ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের হাতে শেয়ার সংখ্যা এখনও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের চেয়ে বেশি আছে।

মোট শেয়ারের ৪১.৮৯ শতাংশ বা ৩৬ কোটি ৭০ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭৮টি শেয়ার আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।

আগস্ট শেষে কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ২৬.০৯ শতাংশ বা ২২ কোটি ৮৬ লাখ ৩১ হাজার ৫৯৫টি শেয়ার আছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে।

মোট শেয়ারের ১.৪৭ শতাংশ বা ১ কোটি ২৮ লাখ ৮১ হাজার ৮৮৭টি শেয়ার আছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে।

প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী কারা

পুঁজিবাজারে ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি সক্রিয় অংশগ্রহণ করে থাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। পুঁজিবাজারে তাদের সবচেয়ে দক্ষ বিনিয়োগকারী হিসেবে দেখা হয়।

প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হচ্ছে মূলত অনুমোদিত স্টক ডিলার, স্টক ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংক ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য বা ব্রোকারেজ হাউস।

ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, কাস্টডিয়ান, ট্রাস্টি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোও পুঁজিবাজারের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হিসেবে পরিচিত।

এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক বা তফসিলি ব্যাংক পুঁজিবাজারে যে বিনিয়োগ করে থাকে, তাদেরও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এ বিভাগের আরো খবর