সংগঠনে পদ না পাওয়া নিয়ে বিরোধে রাজধানীতে যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলামকে হত্যার চেষ্টা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে শনিবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ডিবির প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার।
তিনি জানান, ঢাকার খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে রেমন্ড টেইলার্সের সামনে ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবির মতিঝিল বিভাগ।
কুমিল্লার বরুড়ার আমড়াতলী এলাকা থেকে শুক্রবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দুজন হলেন মনিরুজ্জামান সুমন ও মো. ইমন।
ডিবি জানায়, গ্রেপ্তার দুজনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, খিলগাঁওয়ের ত্রিমোহনী এলাকা থেকে দুটি পিস্তল ও তিনটি গুলি উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ডিবির কর্মকর্তা হাফিজ আক্তার জানান, গত ১৫ মে আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে রেমন্ড টেইলার্সের সামনের রাস্তায় সুমন ও তার সহযোগীরা সাইফুল ইসলামকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করেন। পরে তারা মোটরসাইকেলে করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। গুলিবিদ্ধ সাইফুল নিজেই একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠে ঢাকা মেডিক্যালে গিয়ে চিকিৎসা নেন।
এ ঘটনায় সাইফুলের স্ত্রী সবুজবাগ থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। সে মামলার তদন্ত শুরু করে ডিবির মতিঝিল বিভাগ।
হাফিজ আক্তার বলেন, সাইফুল ইসলামের বাল্যবন্ধু ছিলেন কচি, রিপন ও সুমন। তারা একসঙ্গেই রাজনীতি শুরু করেন। সাইফুল ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেলেও রিপন ও সুমন তা পাননি। এ নিয়ে সাইফুলের সঙ্গে অন্যদের দূরত্ব সৃষ্টি হয়।
তিনি জানান, সাইফুলের পদ পাওয়ার পর থেকে তার বাল্যবন্ধুরা আলাদা গ্রুপ তৈরি করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করতে থাকেন।
ডিবির প্রধান বলেন, ‘রিপন গ্রুপের সদস্য বাশারকে হত্যার ঘটনার মামলার ১ নম্বর অভিযুক্ত ছিলেন ভিকটিম সাইফুল। ভিকটিম সাইফুল এই মামলায় দীর্ঘদিন জেলে থাকার কারণে সুমন গ্রুপ এলাকায় একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করতে থাকে।
‘ভিকটিম সাইফুল জেল থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর সুমন গ্রুপ ও রিপন গ্রুপ এলাকায় তাদের আধিপত্য বিস্তার হ্রাস পাওয়ার ভয়ে দুই গ্রুপ একত্রিত হয়ে সাইফুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঘটনার দিন রিপন, কচি, সুমন, ইমনসহ ১২ থেকে ১৩ জন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় রিপন সাইফুলকে ২ রাউন্ড গুলি করেন এবং গ্রেপ্তারকৃত সুমন ১ রাউন্ড গুলি করে সবাই পালিয়ে যান।’
ডিবি জানায়, হত্যাচেষ্টা মামলার ৯ আসামির মধ্যে এর আগে মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে কচি, রাসেল তালুকদার ওরফে চাপাতি রাসেল, উজ্জ্বল তালুকদার ও আমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামি রিপনসহ অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
কুমিল্লায় গ্রেপ্তার দুজনের কাছ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের ঘটনায় খিলগাঁও থানায় অস্ত্র আইনে আলাদা একটি মামলা হয়েছে।