বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিক্ষা দিবস: শহীদদের দাবি আজও অধরা

  •    
  • ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২২:৩০

সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ডোপ টেস্টের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে কতজন দালাল আছে সে পরীক্ষাও চালানো হোক। ইতোমধ্যে সরকার খবর পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় খুললে আন্দোলন-সংগ্রামে হতে পারে। আমরা বলতে চাই বিশ্ববিদ্যালয় খুললেও আন্দোলন চলবে, বন্ধ থাকলেও চলবে। যতদিন গণতান্ত্রিক ও সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা পাবে না, তত দিন আন্দোলন চলবে।’

১৯৬২ সালে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যেসব ছাত্ররা শহীদ হয়েছিলেন তাদের দাবি এখনও বাস্তবায়িত হয়নি বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা।

শুক্রবার শিক্ষা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। প্রগতিশীল ৮টি ছাত্র সংগঠন এ ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করেন।

গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ও সার্বজনীন শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীরা রক্ত দিলেও আজও আমরা সেই অধিকার পাইনি। মহান শিক্ষা দিবসের শহীদরা চেয়েছিলেন এমন শিক্ষা পদ্ধতি, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মানবিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে মানুষ হয়ে ওঠবে। কিন্তু আমাদের বর্তমান শিক্ষানীতি তা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর চাপিয়ে দেয়া শরীফ কমিশনের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে ১৯৬২ সালের এই দিনে অনেক শিক্ষার্থী মারা যান। এরপর থেকেই এই দিনকে শিক্ষা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন।

এই শরীফ কমিশনের প্রতিবেদনে উচ্চশিক্ষা ধনিক শ্রেণির জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বায়ত্তশাসনের পরিবর্তে পূর্ণ সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রস্তাব রাখা হয়। এমনকি কমিশন বাংলা বর্ণমালা সংস্কারেরও প্রস্তাব করে। শিক্ষার্থীরা এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেন।

শিক্ষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ডোপ টেস্টের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে কতজন দালাল আছে সে পরীক্ষাও চালানো হোক। ঢাকা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দালালের কারখানা তৈরি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তরা সরকারের পা চেটে দায়িত্ব পেয়েছেন।’

এই ছাত্রনেতা আরও বলেন, ইতোমধ্যে সরকার খবর পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় খুললে আন্দোলন-সংগ্রামে হতে পারে। আমরা বলতে চাই বিশ্ববিদ্যালয় খুললেও আন্দোলন চলবে, বন্ধ থাকলেও চলবে। যতদিন গণতান্ত্রিক ও সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা পাবে না, তত দিন আন্দোলন চলবে।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদ) কেন্দ্রীয় সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে কী হবে সেটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে এমন কথা ছিল। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ে কী হবে তা নির্ধারণ করে দিচ্ছে সরকার ও শিক্ষামন্ত্রী। অথচ এই সরকার করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো দায়িত্বই নেয়নি, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো গবেষণা বা বরাদ্দ রাখেনি।’

মাসুদ রানা বলেন, জনগণের অজ্ঞতাই শাসকের শক্তি, এটা তারা জানে। তারা জানে জনগণ শিক্ষিত হলে প্রশ্ন করবে। আর তাই প্রশ্নহীন-আনুগত্যশীল একটি জাতি নতুন এই শিক্ষানীতির মাধ্যমে এই সরকার তৈরি করতে চায়।

গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি আরিফ মঈন উদ্দিন বলেন, শিক্ষা আন্দোলনের শহীদরা যে দাবিতে আন্দোলন করে গেছে সে দাবি আমরা আজও প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। আমরা দাবি করতে চাই সেপ্টেম্বরের মধ্যেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়া হোক এবং সেই লক্ষে পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

ছাত্র ইউনিয়নের বিদ্রোহী অংশের সহ-সভাপতি অনিক রায় বলেন, ‘শিক্ষা আন্দোলনের এতো বছর পরেও শিক্ষাকে বাণিজ্যকরণ অব্যহত রয়েছে। আর তাই সেই শিক্ষা আন্দোলনের মিছিল চলমান। যতদিন সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত না হচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো গবেষণাগারে পরিণত না হচ্ছে, ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে।

সমাবেশে থেকে সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা পাঁচ দফা দাবিও উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো করোনাকালে সকল বেতন ফি মওকুফ, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর আরোপিত কর প্রত্যাহার, এই বছর থেকেই পিএসি-জেএসসি বাতিল, করোনাকালে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ারোধে রাষ্ট্রীয় প্রণোদনা এবং শিক্ষার বাণিজ্যকরণ-বেসরকারিকরণ বন্ধ করে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশ ছাত্র কাউন্সিলের সহসভাপতি সায়েদুল হক নিশানের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুবাশিষ চাকমা, বিল্পবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সভাপতি আতিফ অনিক, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায়।

এ বিভাগের আরো খবর