সুন্দরবনের দুবলার চর এবং ওই এলাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত সরকারঘোষিত রুটে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় কাঁকড়া পরিবহনে বন অধিদপ্তরের তথা সরকারের নিষেধাজ্ঞা অবৈধ বলে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
আদেশে আদালত বলেছে, এই রায় অপব্যবহার করে কেউ যাতে ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ঢুকতে না পারে, সে জন্য নির্দেশনা থাকবে।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ পর্যবেক্ষণসহ এ রায় দেয়। জাহান আলী গাজীসহ ৮ জনের রিটের শুনানি নিয়ে জারি করা রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে এ রায় দেয় আদালত।
এ আদেশের ফলে সরকারের নির্ধারিত রুটে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বাইরে থেকে কাঁকড়া সংগ্রহ করে তা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে খুলনায় আনা যাবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট চঞ্চল কুমার বিশ্বাস ও অ্যাডভোকেট আল ফয়সাল সিদ্দিকী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট আল ফয়সাল সিদ্দিকী বলেন, নিবন্ধিত ট্রলারে পশুর নদী ব্যবহার করে দুবলার চর থেকে সব ধরনের মাছ পরিবহনের অনুমতি আছে বন বিভাগের। তবে কাঁকড়া বহনের অনুমতি দেওয়া হচ্ছিল না। ফলে কাঁকড়া ধরার পর খুলনা আনতে দেরি হওয়ায় অনেক কাঁকড়া মারা যেত।
এ অবস্থায় অন্যদের মতো ইঞ্জিনচালিত নৌকায় কাঁকড়া পরিবহনের অনুমতি চেয়ে ২০১৮ সালের ১২ আগস্ট প্রধান বন সংরক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদন করেন দাকোপ ও বটিয়াঘাটাসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার কাঁকড়া আহরণকারী জেলেরা।
কিন্তু বন বিভাগ ওই আবেদনে সাড়া না দেওয়ায় জেলেরা ওই বছরই হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। হাইকোর্ট ৩০ দিনের মধ্যে ওই আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়।
এরপর বন বিভাগ থেকে ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর আবেদনকারীদের জানায় যে কাঁকড়া পরিবহনের অনুমতি দেয়া হবে না। এরপর বন বিভাগের ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ২০১৯ সালে রিট আবেদন করেন। হাইকোর্ট রুল জারি করে। এই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে এ রায় দেয় হাইকোর্ট।