ভোলায় সর্বজনীন দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি গৌরাঙ্গ চন্দ্র দের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে ধর্মীয় কটূক্তিমূলক বার্তা ছড়ানোর অভিযোগে থানায় জিডি হয়েছে। বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য আইডির তথ্য ও মেসেঞ্জারের বার্তার স্ক্রিনশট পাঠানো হয়েছে পুলিশ সদর দপ্তরের আইসিটি বিভাগে।
স্ক্রিনশটটি বুধবার রাত ১০টার দিকে ভাইরাল হওয়ার পর নিরাপত্তা শঙ্কায় ভোলা সদর থানায় অবস্থান নেন গৌরাঙ্গ।
এ বিষয়ে রাতেই ভোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে জানান, পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছে। ওই আইডির তথ্য যাচাইয়ের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
তবে রাতেই ভোলা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাচিয়া কলোনিতে গৌরাঙ্গ চন্দ্রের বাড়িতে থাকা গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায় এক দল লোক।
এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা বৃহস্পতিবার বিকেলে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। এ সময় গৌরাঙ্গ চন্দ্রকে গ্রেপ্তারে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাতে গৌরাঙ্গর মেসেঞ্জার থেকে ‘জয় রাম’ নামের এক জনের মেসেঞ্জারে ধর্মীয় কটূক্তি করা হয়। পরে কথোপকথনের স্ক্রিনশট জয় রামের ফেসবুক আইডি থেকে ছড়িয়ে দেয়া হয়, যা দ্রুত ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাতেই ভোলা সদর মডেল থানার ওসি এনায়েত হোসেন নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়, ভোলা জেলার সর্বজনীন দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি গৌরাঙ্গ চন্দ্র দের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি (গৌরাঙ্গ দে জিসি দেব) কে বা কারা হ্যাক করে অসত্য, বানোয়াট ও উসকানিমূলক বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করছে। আইডি হ্যাক হওয়ার বিষয়ে তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
জয় রামের আইডি থেকে ছড়ানো কনটেন্টের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার কথা জানিয়ে বলা হয়, ‘কেউ গুজবে কান দেবেন না।’
দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক মুহাম্মদ শওকাত হোসেন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সঠিকভাবে তদন্ত করলে এই ঘটনার প্রকৃত দোষী জয় রামের ফেসবুক আইডি থেকে শুরু করে যে আইডির সঙ্গে কথোপকথন হয়েছে, তা বের করা কঠিন হবে না। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা উচিত। তাহলে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের দুঃসাহস দেখাতে পারবে না।’
ভোলা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘কটূক্তি ও কুরুচিপূর্ণ ভাষায় মন্তব্যের বিষয়টি আমরা জানার পর গত কাল রাত থেকেই দোষীকে চিহ্নিত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। দুই ফেসবুক আইডির তথ্য যাচাইয়ের জন্য ঢাকা হেডকোয়ার্টারে আইসিটি বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
‘যত দ্রুত সম্ভব তথ্য যাচাই-বাছাই করে অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।’