বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফেনীর নদীতেও অধরা ইলিশ

  •    
  • ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২০:২৪

জেলেরা জানান, এ সময় যেখানে জালভর্তি ইলিশ পেয়ে তাদের মুখে হাসি থাকার কথা, সেখানে অধিকাংশ জেলেই ফিরছেন হতাশা নিয়ে। সাগরে যাওয়ার খরচের টাকাই উঠছে না তাদের। এ কারণে প্রতিদিন মাছ ধরার ট্রলারের সংখ্যা কমছে।

ফেনীর সোনাগাজী উপকূলীয় এলাকায় সারি সারি নোঙর করে রাখা মাছ ধরার নৌকা। তাতে বসে জাল ঠিক করছেন জেলেরা। তবে অধিকাংশই কাটাচ্ছেন অলস সময়।

অথচ এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। অন্যান্য বছর এ সময় দম ফেলার সময় মেলে না জেলেদের। তবে এবার দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। ভরা মৌসুমেও ফেনীর নদীগুলোতে ইলিশ না মেলায় মাছ ধরায় আগ্রহ হারাচ্ছেন জেলেরা।

তারা জানিয়েছেন, উপজেলার চরছান্দিয়া জেলেপাড়ার প্রায় ২৫০ জেলে ইলিশের মৌসুমে ৭০টি ট্রলার ও নৌকা নিয়ে মাছ ধরেন। এ জন্য মৌসুমের শুরুতেই নৌকা ও জাল কেনা এবং মেরামতের জন্য মহাজনের কাছ থেকে দাদনসহ ঋণ করেন জেলেরা।

এরপর চার-পাঁচ মাস ইলিশ ধরেন। সেই মাছ বিক্রির টাকা দিয়ে কিস্তির মাধ্যমে ঋণ শোধ করেন। বাকি টাকায় চলে সংসার। তবে আশানুরূপ মাছ না পাওয়ায় কীভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন, সেই চিন্তায় দিন কাটছে তাদের।

তারা আরও জানান, মাছ ধরায় দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে অনুমতি মিলেছে বেশ কিছুদিন আগে। আরেকটি নিষেধাজ্ঞা আসার সময় এসে গেছে। অথচ জাল নিয়ে প্রায়ই শূন্য হাতে ফিরতে হচ্ছে তাদের।

এ সময় যেখানে জালভর্তি ইলিশ পেয়ে তাদের মুখে হাসি থাকার কথা, সেখানে অধিকাংশ জেলেই ফিরছেন হতাশা নিয়ে। সাগরে যাওয়ার খরচের টাকাই উঠছে না তাদের। এ কারণে প্রতিদিন মাছ ধরার ট্রলারের সংখ্যা কমছে।

জেলেপাড়ার ট্রলারমালিক চট্টু মহাজন জানান, তার একটি বড় ট্রলারে প্রায় ১২ জন জেলে মাছ ধরেন। গত সপ্তাহে সবশেষ মাছ ধরতে গিয়ে সারা রাতে ৫০০ ফুটের জাল ফেলেন তিনবার। প্রায় ৬ হাজার টাকা খরচ করে ওই রাতে পান ৩০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ১০টি ইলিশ। এখন ঘাটে নোঙর করে বসে আছেন।

জয়দেব জলদাস জানান, কিছুদিন আগে পাঁচ জেলে সারা রাত শেষে ফেরেন আধা কেজি ওজনের দুটি ইলিশ নিয়ে।

তিনি বলেন, ঋণের টাকায় নতুন জাল কিনেছেন। নৌকা মেরামত করছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে ঋণের কারণে তারা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়বেন।

একই এলাকার দুই ভাই কৃষ্ণ মোহন জলদাস ও সুদাংশু জলদাস নিষেধাজ্ঞার সময় মহাজনের কাছ থেকে দাদন নিয়ে ট্রলার ও জাল মেরামত করেছেন। এনজিওর কাছ থেকে নিয়েছেন আরও ৫০ হাজার টাকা ঋণ। ইলিশ না পেলে কীভাবে কিস্তি শোধ করবেন, তা নিয়ে এখন ঘুম হারাম হয়ে গেছে তাদের।

দুই ভাই জানান, ১০ দিন আগে নদীতে গিয়ে একটা ইলিশও পাননি। শুধু কয়েকটি পোয়া মাছ নিয়ে ফিরেছেন।

প্রিয়লাল নামের এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, গত বছরও অনেক ইলিশ বেচাকেনা করেছেন। ইলিশ না মিললে পরিবার কীভাবে চলবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সবাই।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তূর্য সাহা বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার নদীতে মাছের সংখ্যা তুলনামূলক কম। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমাদের ঋতুগুলোতেও আলাদা বৈচিত্র্য পরিলক্ষিত হচ্ছে।’

তিনি জানান, অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাজ চলমান থাকায় বিকট শব্দ ও দূষণে ইলিশ উপকূল থেকে গভীর সমুদ্রে জেলেদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এ ছাড়া সোনাগাজী অংশে জেগে উঠছে বিশাল চর, নদী হারাচ্ছে নাব্যতা। মুছাপুর অংশে ক্লোজার বাঁধ নির্মাণের কারণেও এখানে মাছের পরিমাণ কমেছে।

এ বিভাগের আরো খবর