বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে কোনো সেক্টরের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেননি, বরং তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে বৃহস্পতিবার সমাপনী বক্তব্যে সরকার প্রধান এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদ মোশাররফ যখন আহত হয়ে যান, তখন মেজর হায়দার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান সেক্টর কমান্ডার হয়নি।’
বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদের কথার প্রসঙ্গে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একজন সংসদ সদস্য বলেছেন, জিয়া যেখানে দায়িত্বে ছিল, সেখানে নাকি বেশি মানুষ মারা গেছে। ক্যাজুয়ালিটি সব থেকে বেশি। সে একটা সেন্টারে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। আর সেখানে ক্যাজুয়ালিটি বেশি হয়েছে।’
জিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া থেকে মনে প্রশ্ন জেগেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘তাহলে প্রশ্ন আসে: সে তাহলে যুদ্ধে কী কাজ করেছে? পাকিস্তানিদের পক্ষে, যাতে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা মৃত্যুবরণ করে, ওই ব্যবস্থা করেছিল কি না সেটাই আমার প্রশ্ন। সে তো একটা সেক্টরের অধিনায়ক, সেক্টর কমান্ডার না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানেই প্রশ্ন, একটা সেক্টরে অধিনায়ক হয়ে সেখানে ক্যাজুয়ালিটি বাড়িয়ে দেওয়ার মানে কী? সে নিজের হাতে পাকিস্তানি সেনাদের গুলি করতেই যায়নি। সে আমাদের নিজেদের লোকদের এগিয়ে দিয়েছে মরতে।’
মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা প্রসঙ্গেও বিশদ আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সে কী করেছে আমি বলি। কর্নেল আসলাম বেগ, সে তখন ঢাকায় কর্মরত ছিল, পরবর্তীতে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান হয়েছিল। সেই কর্নেল বেগ জিয়াকে একটা চিঠি দেয় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন, ৭১ সালে। সেই চিঠিতে সে লিখেছিল, আপনি খুব ভালো কাজ করছেন। আমরা আপনার কাজে সন্তুষ্ট। আপনার স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে কোনো চিন্তা করবেন না। আপনাকে ভবিষ্যতে আরও কাজ দেয়া হবে।’
সেই চিঠিটা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আছে বলেও সংসদকে জানান তিনি। বলেন, ‘কথাটা উঠবে জানলে আমি চিঠিটা নিয়ে আসতাম। এক সময় আমি নিয়ে আসব। এটা আমাদের প্রসিডিংসের পার্ট হয়ে থাকা উচিত।’