বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের শাসনামলে দেশের বিভিন্ন কারাগারে কতসংখ্যক মানুষকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে, তার তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে সমাপনী বক্তব্যে নিজের দলের সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান এ নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সংসদ সদস্যদের একটা উদ্যোগ নেয়া উচিত। জিয়ার আমলে প্রতিটা কারাগারে কত মানুষকে ফাঁসি দিয়ে মারা হয়েছে, বিশেষ করে ঢাকা, বগুড়া, রাজশাহী, খুলনা, কুমিল্লা- একেকটা ক্যু আর শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আর্মি অফিসার, আর্মি সোলজার, বিমানবাহিনীর ৫৬৩ জন অফিসার, সোলজার- এ রকম কত মারা গেছে?’
এসব তথ্য খুঁজে পাওয়া যাবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো থেকে যায়। এগুলো খুঁজে বের করে দেখেন। একেক রাতে ফাঁসি দিতে দিতে মানসিক ভারসাম্যও হারিয়ে ফেলেছেন, এখনও এমন লোক আছেন।’
সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনে বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানার রাখা বক্তব্যের জের ধরেও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘একটা কথা ভালো বলেছেন রুমিন ফারহানা। ইতিহাস ফিরে আসে। হ্যাঁ, ঠিক তাই। আমি সম্পূর্ণ একমত। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল। তার ছবিটা দেখানো হতো না।’
এ সময় পঁচাত্তর-পরবর্তী দেশের শাসনব্যবস্থা নিয়েও কথা বলেন সংসদ নেতা।
তিনি বলেন, ‘আমার অধিকার নাই আমার বাবা-মা হত্যার বিচার চাওয়ার। আমাদের দলে বেইমান খন্দকার মোশতাক তো ছিলই। এটা তো অস্বীকার করি না। আমাদের বাড়ির ভাত কার পেটে না গেছে। জিয়াউর রহমান তো খালেদা জিয়াকে নিয়ে মাসে একবার করে আমার বাসায় গিয়ে বসে থাকত।’
প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, ‘এদের কাছে মানবাধিকারের কথা শুনতে হয়, জ্ঞানের কথা শুনতে হয়, আইনের শাসনের কথা শুনতে হয়।’