অর্থ আত্মসাতের মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের (প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান) বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ ২১ অক্টোবর ঠিক করেছে আদালত।
রাজধানীর গুলশান থানায় আরিফ বাকের নামে এক গ্রাহকের করা অর্থ আত্মসাতের মামলায় ইভ্যালি প্রধান মো. রাসেল ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডে রাসেলের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিন মামলার এজাহার আদালতে আসে। ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্যমহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূরের আদালত মামলার এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার এ তারিখ ঠিক করেছে।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট থানার আদালতের সাধারণ শাখার নিবন্ধন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২৯ মে থেকে জুন পর্যন্ত মোটরসাইকেলসহ বেশ কয়েকটি পণ্য অর্ডার করেন আরিফ বাকের। এগুলো ৭ থেকে ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে দেয়ার কথা থাকলেও তিনি সেটি পাননি। এমনকি কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিয়েও এর সমাধান পাননি। অফিসে গিয়ে তাদের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বললে তারা সঠিক কোনো জবাব দিতে পারেনি। এমনকি প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তাব্যক্তির সঙ্গেও কেউ দেখা করতে দেয়নি। বারবার এ চেষ্টা করা হলেও ইভ্যালির পক্ষ থেকে তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়।
এজাহারে বাদী বলেছেন, গত ৯ সেপ্টেম্বর আরিফ ও তার দুই বন্ধু ইভ্যালির অফিসে যান। সিইও রাসেলের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে বাধা পেয়ে ফিরে আসেন। পরদিন তারা আবার যান ইভ্যালি অফিসে। অফিস প্রতিনিধিরা আরিফ ও তার বন্ধুদের সঙ্গে চিৎকার চেঁচামেচি করেন। এসব শুনে ভেতর থেকে সিইও রাসেল বেরিয়ে আসেন এবং তিনি হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান।
বাদী বলেন, ‘এক পর্যায়ে অফিসের ভেতরে থাকা ইভ্যালির সিইও রাসেল সাহেব উত্তেজিত হয়ে তার রুম থেকে বেরিয়ে এসে আমাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে এবং আমাদের পণ্য অথবা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে। আমাদের প্রাণ নাশের হুমকিও প্রদান করে।
‘তখন ইভ্যালির চেয়ারম্যানও সেখানে উপস্থিত হয়ে পণ্য অথবা টাকা প্রদানে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে। তিনিও আমাদের ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদানসহ চরম দুর্ব্যবহার করে, যার ফলে আমরা চরম আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে দিন যাপন করছি এবং পণ্যগুলো বুঝে না পাওয়ায় আমি আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।’
মামলায় ৩ লাখ ১০ হাজার ৫৯৭ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আদালতে সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্রে জানা গেছে, ইভ্যালির চলতি সম্পদের পরিমাণ ৯০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। সম্পত্তি স্থাপনা ও যন্ত্রপাতির মিলিয়ে রয়েছে ১৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। তবে প্রতিষ্ঠানটির দায় ৫৪৩ কোটি টাকা।
সম্প্রতি ইভ্যালিসহ বেশকিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রাহকের সঙ্গে অর্থ নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ ওঠে। একই সঙ্গে তাদের বর্তমান সম্পদের সঙ্গে গ্রাহকের কাছ থেকে নেয়া অর্থের কোনো সামঞ্জস্য পায়নি বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।
পরে তারা বিষয়টি লিখিতভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানান।