ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো ৫ অক্টোবর থেকে খুলে দিতে প্রভোস্ট কমিটির সুপারিশে অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে সিন্ডিকেট সভায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের সমন্বয়ে গঠিত অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় ভার্চুয়াল বৈঠকে বসে। তাতে আগামী ৫ অক্টোবর থেকে হলগুলো খোলার জন্য প্রভোস্ট কমিটির সুপারিশে অনুমোদন দেয়া হয়।
অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের এ রিপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় যাবে। শনিবার হবে সিন্ডিকেট সভা। সেখানেই হল খোলার তারিখ চূড়ান্ত করা হবে।
সভা সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের মেস বা বাসা ভাড়ার বিষয়টি চিন্তা করে কয়েকজন অধ্যাপক সভায় ১ অক্টোবর থেকে হল খোলার প্রস্তাব রেখেছেন। তবে সেটি আমলে নেয়নি অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল। ৫ অক্টোবরেই সবাই সমর্থন দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সামগ্রিক বিষয় চিন্তা করে প্রভোস্ট কমিটির সুপারিশেই অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল অনুমোদন দিয়েছে। আগামী শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এসব বিষয় চূড়ান্ত হবে।’
এর আগে বুধবার প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি টিকার প্রথম ডোজ নেয়ার শর্তে চতুর্থ বর্ষ এবং মাস্টার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য আগামী ৫ অক্টোবর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল এবং ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে গ্রন্থাগার খোলার সুপারিশ করে।
সুপারিশে বলা হয়, ৫ অক্টোবর সকাল ৮টা থেকে এই দুই বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক হলোগুলোর গেট খুলে দেয়া হবে। এ ছাড়া ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চতুর্থ বর্ষ এবং মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার এবং বিভাগ ইনস্টিউটগুলোর সেমিনার খোলা থাকবে।
সুপারিশের আরও বলা হয়, সব শিক্ষার্থীকে হল এবং লাইব্রেরিতে প্রবেশ করতে হলে অবশ্যই প্রথম ডোজ টিকা নেয়ার সনদ দেখাতে হবে।
এই সুপারিশের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ জানাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ সুপারিশ অভিভাবকসুলভ হয়নি। শিক্ষার্থীরা ১ অক্টোবর থেকে হল খোলার দাবি জানান।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি ১ অক্টোবর থেকে হল খোলার সুপারিশ করত, তাহলে তারা মাসের শেষ দিনেই বাসা ছেড়ে দিতে পারত, কিন্তু ৫ তারিখ হওয়াতে এখন তাদের পাঁচ দিনের জন্য পুরো মাসের ভাড়া পরিশোধ করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, সেপ্টেম্বরেই হল খুলবে ভেবে অনেক শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে বাসার মালিককে জানিয়ে দিয়েছেন তারা এই মাসেই বাসা ছেড়ে দেবেন। কিন্তু ৫ তারিখ থেকে হল খোলা হলে এই পাঁচ দিন এই শিক্ষার্থীরা থাকবেন কোথায়?
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সুপারিশ পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনও। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের স্বার্থের কথা চিন্তা করে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় খোলা উচিত। সরকারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে বৈঠক হয়েছে, সেখানেও জানানো হয়েছে ২৭ সেপ্টেম্বরের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সিন্ডিকেট হল খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।