সূচক বেড়েছে ৩১ পয়েন্ট, কিন্তু কমেছে বেশির ভাগ শেয়ারের দর। কোনো একক খাত নয়; প্রায় সব খাতের শেয়ারধারীরাই হতাশ।
বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মা, কেপিসিএল, স্কয়ার ফার্মা গ্রামীণ ফোনের মতো বড় মূলধনি কোম্পানিগুলোর দর বৃদ্ধি পাওয়ায় সূচকে পয়েন্ট যোগ হয়েছে বটে৷ কিন্তু ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিওতে টাকা কমে যাওয়ার বিষয়টা উঠে আসছে তাদের বয়ানে।
১২৭টি কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ার দিন দুই শতাধিক কোম্পানির দরপতনই এর কারণ।
স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে তদন্তে কমিটি গঠন, এরপর পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল নিয়ে বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে টানাপোড়েনের প্রভাব এখনও যে বিনিয়োগকারীদের মনে রয়ে গেছে সেটাও স্পষ্ট।
জুনে অর্থবছর শেষ করা কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ সচরাচর ডিসেম্বরে অর্থবছর শেষ করা কোম্পানিগুলোর তুলনায় কম থাকে। তার ওপর গত কয়েক মাসে লোকসানি বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে ব্যাপক হারে। যদিও তারা লভ্যাংশ দিতে পারবে কি না, এ নিয়ে আছে প্রশ্ন।
সব মিলিয়ে টানা তিন দিন পতনের পর টানা দুই দিন সূচক সামান্য বাড়ল।
তবে দিন শেষে অনেক কোম্পানির দর কমে, কোনোটির দর বৃদ্ধির হার কমে৷ কোনোটির দর পতনের হার বাড়ে।
উত্থান থেকে দর পতনে ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দর পতনের খাতায় নাম লিখিয়েছে ব্যাংক খাতের শেয়ার। এদিন লেনদেনে ছয়টি ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে। দর হারিয়েছে ২১টির। লেনদেন হয়েছে মোট ১৫৪ কোটি ২১ লাখ টাকা।
লেনদেনে সবচেয়ে বেশি দর বেড়ছে ন্যাশনাল ব্যাংকের ১.১৭ শতাংশ। শেয়ার দর ৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮ টাকা ৬০ পয়সা।
তারপরেই আছে সিটি ব্যাংক, যার শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ১.০২ শতাংশ। মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে দশমিক ৯৭ শতাংশ।
দর হারিয়েছে সবচেয়ে বেশি রূপালী ব্যাংক, ২.৭২ শতাংশ। শেয়ার প্রতি দর ৪০ টাকা ৫০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৩৯ টাকা ৪০ পয়সা। এরপরই আছে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, যার শেয়ার প্রতি দর কমেছে ২.৬৭ শতাংশ।
এক্সিম ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ২.২৬ শতাংশ। আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ১.৪৯ শতাংশ।
বিমায় বেড়েছে শেয়ার দর
বিমা খাতের শেয়ার দর বেড়েছে বৃহস্পতিবার। লেনদেনে ১৬টি বিমা কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। ৩২টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। এদিন মোট লেনদেন হয়েছে ২৪৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
লেনদেনে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে প্রভাতি ইন্স্যুরেন্সের ৫.৭৭ শতাংশ। শেয়ার দর ১৭০ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৮০ টাকা ৩০ পয়সা।
সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৪.৮৫ শতাংশ। শেয়ার দর ৭৮ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮২ টাকা ১০ পয়সা।
ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৪.৫৫ শতাংশ। মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৩.৮৭ শতাংশ।
অন্যান্য খাতের লেনদেন
ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে দর হারিয়েছে ২৪টির, বেড়েছে ৭টির দর। হাতবদল হয়েছে ২২৬ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২৪টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৩টির, কমেছে ৯টির। লেনদেন হয়েছে ১৫৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৬টির, কমেছে ১৪টির। এই খাতে লেনদেন হয়েছে ৭২ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
বিবিধ খাতের ১৪টি কোম্পানির মধ্যে দাম কমেছে ৭টির, বেড়েছে ৭৮টির। হাতবদল হয়েছে ১৯২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
তথ্য প্রযুক্তি খাতের ১১টি কোম্পানির মধ্যে দর হারিয়েছে ৪টি। ৬টির দর বেড়েছে। এই খাতে লেনদেন হয়েছে ৬৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ২২ লাখ টাকা। ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে কেবল ৫টির, দর হারিয়েছে ১০টির।
সূচক ও লেনদেন
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩১ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ২২৮ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ৮ দশমিক ৩২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৭৭ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ২৫ দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৭৪ পয়েন্টে।
লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১৭১ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৯৭ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৩৯ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ১৪১ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে ৮৪ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬৮ কোটি টাকা।