চাকরি করতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন তিনি। এরপর ২০১৭ সালে লাইসেন্স নিয়ে শুরু করেছিলেন আউটসোর্সিং ব্যবসা। সেখানে বেশি লাভ না হওয়ায় শুরু করেন ভুয়া নিয়োগের কারবার।
আস্থা গেটওয়ে লিমিটেডের নামে শুরু করেন প্রতারণা। এ কাজে মানুষের আস্থা অর্জন করতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের (এমপি) স্বাক্ষরও জাল করেন।
ভুঁইফোড় কোম্পানি খুলে চাকরিপ্রার্থীদের জাল নিয়োগপত্র দিয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতানো এমন একজনকে সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে বুধবার বিকেলে তাদের আটক করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে ওই দুজনসহ পাঁচজনের নামে ভাটারা থানায় মামলা করা হয়। সে মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন কথিত কোম্পানি আস্থা গেটওয়ে লিমিটেডের চেয়ারম্যান আল আমিন ও প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনর রশীদ বাদল।
সিআইডি জানিয়েছে, গ্রেপ্তারের সময় দুজনের কাছ থেকে ইমেক্স ম্যানপাওয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি বাংলাদেশ লিমিটেডের ২৪টি ভুয়া নিয়োগপত্র, চাকরিপ্রার্থীদের আবেদনপত্র, চাকরিপ্রার্থীদের নিবন্ধন ফরম, চাকরিপ্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্তসহ বিভিন্ন মালপত্র উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কী জানা গেল
দুজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করেন ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ইমাম হোসেন।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভাটারা এলাকার পুরাতন ২ হাজার ৪৭০, মাদানী অ্যাভিনিউর দ্বিতীয় তলায় আসামিদের পরিচালিত আস্থা গেটওয়ে লিমিটেডে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখানে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেয়ার মিথ্যা আশ্বাস দেয়া হতো চাকরিপ্রার্থীদের। এ নিয়োগপত্র দিয়ে তাদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হতো।
গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা চাকরি নিয়োগসংক্রান্ত কোনো বৈধ কাগজপত্র উপস্থাপন করতে পারেনি।
পুলিশের শীর্ষস্থানীয় এ কর্মকর্তা বলেন, স্কুলের দপ্তরির মতো চাকরিতে সরকারিভাবে কোনো বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয় না। সেসব চাকরিতে চক্রটি ভুয়া নিয়োগ দেয়। এসব চাকরিতে নিয়োগ সাধারণত স্থানীয় এমপি এবং স্কুলের সভাপতিরা দিয়ে থাকেন। চক্রটি তাই স্থানীয় এমপির স্বাক্ষর জাল করে।
অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, ‘সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনে নিয়োগপত্রে স্থানীয় সংসদ সদস্যের স্বাক্ষর নকল করত প্রতারকচক্রটি। ভিকটিমরা এই নিয়োগপত্র নিয়ে যখন নিয়োগস্থলে যোগাযোগ করেন, তখন জানতে পারেন এটা ভুয়া।
‘এ রকম ৫০ জনের বেশি ভিকটিম আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা অভাবের তাড়না ও বেকারত্ব থেকে এদের কাছে গিয়ে প্রতারিত হয়।’