বছর ওয়ারি হিসাবের পাশাপাশি এখন থেকে তিন মাস পর পর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হিসাব করবে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। জাতীয় প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সংস্থাটি জেলা, আঞ্চলিক জিডিপির হিসাবও করবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং উইং আয়োজিত ‘কোয়াটার্লি ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং (কিউএসএ)’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি বলেন, ‘তিন মাস পর জিডিপি প্রবৃদ্ধির তথ্য দেয়ার বিষয়ে সরকার প্রধানের (প্রধানমন্ত্রী) কাছ থেকে অনুমোদন পাওয়া গেছে। অর্থবছরের শেষে চূড়ান্ত জিডিপির হিসাবতো থাকবেই। এখন থেকে আমরা তিন মাস পর পরও প্রবৃদ্ধি তথ্য দেবো।
‘এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করেছে বিবিএস। তিন মাস পর প্রবৃদ্ধির তথ্য পেলে দেশের আর্থিক স্বাস্থ্যের তথ্যও জানতে পারব, জরুরি পদক্ষেপগুলো নিতে পারব।’
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় পরিকল্পনামন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম ও বিবিএস-এর মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।
বিবিএসকে সময়ের তথ্য সময়ে দেয়ার বিষয়ে নির্দেশনা দেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম। বলেন, ‘আমাদের পাশ্ববর্তী দেশগুলো তিন মাস পর পর জিডিপির হিসাব করে। আমরা দেরিতে হলেও তা শুরু করতে যাচ্ছি। অর্থনীতিকে বোঝা, জানা, নীতি গ্রহণ ও পদক্ষেপ নিতে ত্রৈমাসিক প্রবৃদ্ধির তথ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
‘তবে সময়ের হিসাব সময়ে দিতে হবে। এক মাসের হিসাব পরের মাসেই যেন প্রকাশ পায় তা দেখতে হবে। এক বছরের হিসাব অন্য বছরে গেলে তা দিয়ে তেমন সুফল পাওয়া যায় না।’
সরকারের একমাত্র সংস্থা হিসাবে জাতীয় বিভিন্ন পরিসংখ্যানের অফিসিয়াল তথ্য দেয় বিবিএস। জিডিপির পাশাপাশি বিবিএস জনশুমারি ও গৃহগণনা, কৃষি শুমারি ও অর্থনৈতিক শুমারি পরিচালনা করে।
এ ছাড়া, দেশের গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক নির্দেশক যেমন- মোট দেশজ উৎপাদ (জিডিপি), মোট ব্যয়যোগ্য জাতীয় আয় (জিডিআই), মোট জাতীয় আয় (জিএনআই), সঞ্চয়, বিনিয়োগ, ভোগ প্রভৃতির নির্ভরযোগ্য হিসাব প্রণয়ন ও প্রকাশ করে থাকে বিবিএস। বিবিএসের তথ্যের উপর নির্ভর করেই নেয়া হয় সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা।
বিবিএস প্রতি বছর মোট দেশজ উৎপাদন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার, মূল্যস্ফীতিসহ কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান প্রণয়ন ও প্রাক্কলন ও প্রকাশ করে থাকে।
একটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কেমন তা সে দেশের জিডিপি তথা জাতীয় আয়ের পরিমাণ হতে ধারণা পাওয়া যায়।
১৯৭২-৭৩ সালকে ভিত্তি বছর ধরে বাংলাদেশে প্রথম জিডিপির প্রাক্কলন শুরু করা হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উচ্চতর ধারা বজায় রাখার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে লক্ষণীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর ভিত্তি করে দারিদ্র্য হ্রাসে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।