বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অর্থাভাবে দিন কাটছে জবি ক্যাফেটেরিয়ার কর্মচারীদের

  •    
  • ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০৮:৩৭

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনার শুরু থেকেই ক্যানটিন বন্ধ। প্রথম প্রথম মালিক বেতন দিলেও কয়েক মাস পর দেয়া বন্ধ হয়ে যায়। লকডাউনে আটকে বাড়িও যেতে পারিনি। গ্রামে পরিবার-পরিজন অনেক কষ্টে দিন কাটিয়েছে।’

দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ক্যাম্পাস। ইতিমধ্যে সীমিত পরিসরে খুলে দেয়া হয়েছে সব বিভাগ, ইনস্টিটিউটের অফিস, সেমিনার। তবে এখনও খোলেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ক্যাফেটিরিয়া।

মহামারির এই সংকটে কর্মহীন হয়ে দুশ্চিন্তা ও অর্থাভাবে দিন পার করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার কর্মচারীরা। আর ক্যাফেটেরিয়া খোলা না থাকায় বিপাকে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।

করোনা মহামারি পরিস্থিতির কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে জবির একমাত্র ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ হয়ে যায়।

হিসাব, রান্না, খাবার পরিবেশনসহ ক্যাফেটেরিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ২২ কর্মচারী। কর্মহীন হয়ে অনেকেই এখন পরিবারের বোঝা। কয়েকজন বিভিন্ন কাজে যোগ দিলেও বেশির ভাগ কর্মহীন হয়ে দুশ্চিন্তা ও অর্থাভাবে দিন পার করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার একজন কর্মচারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের অবস্থা খুব খারাপ। ইনকাম নেই, অন্য কোনো কাজ পাচ্ছি না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবই তো চলতাছে। ক্যানটিন খুলে দিলে আমরা খেয়ে-পরে বাঁচি।’

ক্যাফেটেরিয়ার অন্য এক কর্মচারীকে ক্যাম্পাসে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মচারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনার শুরু থেকেই ক্যানটিন বন্ধ। প্রথম প্রথম মালিক বেতন দিলেও কয়েক মাস পর দেয়া বন্ধ হয়ে যায়। লকডাউনে আটকে বাড়িও যেতে পারিনি। গ্রামে পরিবার-পরিজন অনেক কষ্টে দিন কাটিয়েছে।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় শিক্ষার্থীদের ১৩টি টেবিল রয়েছে। প্রতিটি টেবিলের সঙ্গে ছয়টি ও চারটি করে চেয়ার যুক্ত রয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে ৭০ জন খেতে পারলেও এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে খেতে পারবেন ৩৫ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী।

মুজাহিদ নামের বাংলা বিভাগের একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের মেসে খাবার সমস্যা অনেক বেশি। ক্যাফেটেরিয়া খোলা থাকলে এখানে এসে খেতে পারতাম। টিএসসিতে খাবার ভালো না এবং উপচেপড়া ভিড় থাকে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্যাফেটেরিয়া খুলে দেয়া প্রয়োজন।’

গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আদিত্য বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীই ঢাকায় রয়েছেন। পরীক্ষার খবর শুনে অনেকেই ঢাকা আসছেন। সারা দিন অনেকেই ক্যাম্পাসে থাকেন। ক্যানটিন বন্ধ থাকায় আমরা দুপুরে বাইরে খাওয়াদাওয়া করি। যেখানে ক্যানটিন খোলা থাকলে আমাদের খরচ হয় প্রায় ৩৫ টাকা। অন্যদিকে বাইরের হোটেলে বিল হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকা৷ তারপরও মেলে না স্বাস্থ্যসম্মত খাবার।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক মাসুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুনছি বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হবে। আমাদের ক্যানটিন সীমিত আকারে খুলে দিলে আমাদের জন্য খুবই উপকার হবে।’

ক্যাফেটেরিয়া দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা ছাত্রকল্যাণের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমি নতুন নিয়োগ পেয়েছি। নিয়োগ পাওয়ার পরপরই আমি নিয়মিত ক্যাফেটেরিয়ার বিষয়টি তদারক করছি। এর সামনে গাড়ি পার্ক করতে নিষেধ করেছি।

‘ভেতরে কী কী সংস্কার করা প্রয়োজন, সেটির একটি তালিকা করেছি। শিক্ষকদের জন্য আলাদা করে বসার স্থান সেটিও আরও সুন্দর করার চিন্তাভাবনা করছি। কয়েকজন শিক্ষক যারাই আসবে, এখানে তারা যেন খাবারের ভালো পরিবেশ পায়।’

কর্মচারীদের দুরবস্থার বিষয়ে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক মাসুদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। তাদের দাবি ক্যাফেটেরিয়া যেন খুলে দেয়া হয়। আর খুলে না দেয়া হলে কবে খোলা হবে, সেটি জানতে চেয়েছে তারা।

‘আমি ওদের সমস্যাগুলো নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বসে একটা মীমাংসা করে দেব বলে আশ্বাস দিয়েছি।’

ক্যাফেটেরিয়া খোলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইমদাদুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় খুললে ক্যাফেটেরিয়া খুলবে। তারা আমাদের নিয়মিত কর্মচারী নয়, তাই তারা তাদের কর্মচারীদের বিষয়টি দেখবে।’

২০১৯ সালের ২৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাশ ভবনের নিচতলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কার করা ক্যাফেটেরিয়ার উদ্বোধন করেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।

এ বিভাগের আরো খবর