সিলেটের বিয়ানীবাজারে ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ ওঠা মাদ্রাসা শিক্ষককে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বিয়ানীবাজার থানায় বুধবার রাতে তাকে হস্তান্তর করে বিজিবি। এর আগে বলাৎকারের অভিযোগে তাকে নিয়ে সালিশে হামলা এবং এ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে দুপুরে তাকে তুলে নিয়ে যান বিজিবি সদস্যরা।
আটক হযরত হাফিজ আব্দুর রহিম বিয়ানীবাজার হায়দর শাহ (রহ.) হাফিজিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম এবং বিয়ানীবাজার পৌর আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক।
তার বিরুদ্ধে ওই ছাত্রের বাবা বুধবার রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।
স্থানীয় লোকজন জানান, বিয়ানীবাজার বিজিবির এক সদস্যের ছেলে হযরত হায়দর শাহ (রহ.) হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়ত। সম্প্রতি সে মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেয়। পরিবারের সদস্যরা তার কাছে জানতে চাইলে বলাৎকারের বিষয়ে জানায় সে।
ছাত্রের বাবা ও বিজিবি সদস্য বিষয়টি বিয়ানীবাজার পৌরসভার সাবেক প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেনকে জানালে তিনি মঙ্গলবার রাতে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য ও স্থানীয় মুরব্বিদের নিয়ে সালিশ বৈঠকে বসেন।
বৈঠকের একপর্যায়ে ওই শিক্ষকের পক্ষে মাদ্রাসার কিছু-শিক্ষার্থী সাবেক পৌর প্রশাসকের অফিসে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ নিয়ে রাতভর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ইউএনও এবং পৌরসভার মেয়রসহ নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করে বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করেন।
এর মধ্যে বুধবার দুপুরে শিক্ষক আব্দুর রহিমকে মাদ্রাসা থেকে তুলে নিয়ে যান বিজিবি সদস্যরা। বিজিবি-৫২ ব্যাটলিয়নের সদর দপ্তরে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাকে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বিয়ানীবাজার পৌরসভার সাবেক প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেন জানান, আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ নতুন নয়। তিনি পৌরসভার দায়িত্বে থাকার সময়ও এমন অভিযোগ পেয়েছেন। বিচারও হয়েছে। সবশেষ ঘটনায় তিনি ফেঁসে যাওয়ার আশঙ্কায় মাদ্রাসার ছাত্রদের দিয়ে তার অফিসে হামলা চালান।
বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় জানান, মাদ্রাসার মুহতামিমকে বিজিবির পক্ষ থেকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রের বাবা থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এটি মামলা হিসেবে নেয়া হবে।
তবে হায়দর শাহ (রহ.) হাফিজিয়া মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাসুক আহমদ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে সাজানো বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘মাদ্রাসাকে ধ্বংস করার জন্য একটি মহল ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। এ রকম ঘটনা হাফিজ আব্দুর রহিম ঘটাতে পারেন না।’