বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টিফা সই করল বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া

  •    
  • ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৯:২৫

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘টিফা চুক্তি সইয়ের ফলে বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়বে। এতে উভয় দেশ উপকৃত হবে এবং বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পথ খুলবে। কমবে বাণিজ্য বাধা।’ চুক্তি সই অনুষ্ঠানে অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রী তেহান বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের পাশাপাশি আইসিটি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, প্লাস্টিক, শিক্ষাসহ বেশ কিছু সম্ভাবনাময় সেক্টর রয়েছে। টিফা সইয়ের মাধ্যমে উভয় দেশের বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়বে।’

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ জোরদারে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্ট (টিফা) চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ।

বুধবার বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে বাণিজ্য, পর্যটন ও বিনিয়োগমন্ত্রী ড্যান তেহান ভার্চ্যুয়ালি নিজ নিজ দেশের পক্ষে চুক্তিতে সই করেছেন।

এর মধ্য দিয়ে গত পাঁচ দশকের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগে নতুন সুযোগ উন্মোচনের একটি প্ল্যাটফর্ম ও প্রথম কোনো প্রাতিষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরি হয়েছে।

টিফার অধীনে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে, যাতে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট সেক্টর ও সাব-সেক্টরের প্রতিনিধিত্ব থাকবে এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সর্বোচ্চ সম্ভাবনা অর্জন করার জন্য আলোচনা এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই টিফার আওতায় অস্ট্রেলিয়া যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের উদ্বোধনী সভা ২০২২ সালের শুরুতে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

টিফা চুক্তিবিষয়ক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তিটির কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। প্রস্তাবিত চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছর। এরপর উভয় পক্ষ চাইলে এটি নবায়ন করতে পারবে।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টিফার মতো অনুরূপ একটি চুক্তি সই করে বাংলাদেশ।

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা কাঠামো (টিকফা) নামের ওই চুক্তির মতো অস্ট্রেলিয়ার টিফা চুক্তিতে কোনো শর্ত নেই। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তির শিরোনামে কো-অপারেশন এবং অ্যাগ্রিমেন্ট বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ‍কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার প্রস্তাবিত চুক্তিতে কো-অপারেশন শব্দটি নেই। তবে ‘অ্যাগ্রিমেন্ট’-এর পরিবর্তে ‘অ্যারেঞ্জমেন্ট’ বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে অস্ট্রেলিয়ায় ৮০ কোটি ৪৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। একই সময়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে ৫৯ কোটি ৬৭ লাখ ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি হয়েছে। করোনার কারণে গত ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ অর্থবছর দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আশানুরূপ হারে হয়নি। তবে উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বর্তমানের অবস্থা থেকে আরও বিপুল পরিমাণ বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

এ সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতেই একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে টিফা সইয়ে পা রাখল বাংলাদেশ।

সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে যোগদান এবং চুক্তি সইয়ের পর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ বিশ্বে আজ গুরুত্বপূর্ণ স্থান। টিফা চুক্তি সইয়ের ফলে বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়বে। তবে এতে উভয় দেশ উপকৃত হবে এবং বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পথ খুলবে। কমবে বাণিজ্য বাধা। এতে বাড়বে আগ্রহ।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া ২০০৩ সাল থেকে বাংলাদেশকে ডিউটি ফ্রি এবং কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা দিয়ে আসছে। এ জন্য বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ। আগামী ২০২৬ সালে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পরও অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে প্রদত্ত বাণিজ্য সুবিধা অব্যাগত রাখবে এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় এলডিসি গ্রুপের প্রস্তাবে সমর্থন থাকবে বলে আশা করছি।’

চুক্তি সই অনুষ্ঠানে অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রী তেহান বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের পাশাপাশি আইসিটি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, প্লাস্টিক, শিক্ষাসহ বেশ কিছু সম্ভাবনাময় সেক্টর রয়েছে। টিফা সইয়ের মাধ্যমে উভয় দেশের বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়বে।তিনি জানান, অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ প্রসার এবং তা অধিকতর গতিশীল করতে কাজ করে যাচ্ছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এ ধরনের অর্থনৈতিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের উভয় দেশে কর্মসংস্থান ও বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টিতে আরও অবদান রাখতে পারব।’

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিক্ষা, কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং জ্বালানি চাহিদা পূরণে অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে। তিনি অস্ট্রেলিয়ার বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার বহাল রাখার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া কৃষি ও অবকাঠামো উন্নয়নে বিশ্বমানের দক্ষতা বিতরণ করে থাকে, যা থেকে বাংলাদেশ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা নিতে পারবে।

ভার্চ্যুয়াল এই চুক্তি সইয়ের অনুষ্ঠানে বাণিজ্যসচিব তপনকান্তি ঘোষ, অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ শফিউর রহমান, অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. হাফিজুর রহমান, অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার নার্দিয়া সিম্পসনসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কমকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ ও এর আশপাশের দক্ষিণ এশিয়ার স্থলবেষ্টিত অঞ্চলে ৩০০ মিলিয়ন ভোক্তার বাজারে প্রবেশের জন্য অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে প্রবেশপথ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে অস্ট্রেলিয়া যেমন বিনিয়োগ করতে পারে, তেমনি অস্ট্রেলিয়ার শিল্পজাত পণ্যের সরবরাহকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে বিবেচনা করতে পারে।

এ বিভাগের আরো খবর