সিলেটের কানাইঘাটে বৃদ্ধাকে হেনস্তা ও এর ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তারা হলেন কানাইঘাটের আগতালুক গ্রামের মো. আব্দুল্লাহ (৩৮) ও মো. সাইদুল্লাহ (৩৫)। উপজেলার হরিপুর এলাকা থেকে সকালে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) লুৎফর রহমান।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘হেনস্তার ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে আমাদের নজরে আসে। এরপরই আমরা জড়িতদের ধরতে অভিযান শুরু করি। মঙ্গলবার হেনস্তার শিকার নারী থানায় এসে দুটি মামলা করেন। দুই মামলারই এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের ধরতেও অভিযান চলছে।’
কিছু ভুয়া আইডি থেকে গত সোমবার বিকেলে ফেসবুকে ভাইরাল করা হয় হেনস্তার ওই ভিডিও। সাড়ে ৪ মিনিটের ভিডিওতে দেখা যায় চার যুবক ওই বৃদ্ধাকে টানাহ্যাঁচড়া করছেন; তার শাড়ির আঁচল ধরে টানাটানি করছেন। নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে কাকুতি-মিনতি করছেন ওই নারী।
বৃদ্ধার স্বজনদের দাবি, ওই ভিডিও দেখিয়ে বৃদ্ধার দুবাই প্রবাসী ছেলের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন নির্যাতনকারীরা।
বৃদ্ধার এক আত্মীয় নিউজবাংলাকে জানান, গত ২৮ আগস্ট মধ্যরাতে এই ঘটনাটি ঘটে। স্বামী মারা যাওয়ায় এবং দুই ছেলে দুবাই থাকায় ওই বাড়িতে বৃদ্ধা একাই থাকতেন। হেনস্তার পরদিন বাড়িতে তালা দিয়ে তিনি পাশের গ্রামে বাবার বাড়িতে চলে যান।
সেখানে আত্মীয়দের তিনি বিষয়টি জানান। তখন বিদেশে থাকা দুই ছেলেও তাদের জানান, ওই ভিডিও পাঠিয়ে তাদের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে।
ওই আত্মীয় বলেন, এ নিয়ে এলাকায় সালিশও হয়। সম্মান রক্ষায় গত বুধবার রাতে সালিশে ভিডিও ধারণকারীদের চার লাখ টাকা দিতে রাজি হন বৃদ্ধার স্বজনরা। অগ্রিম এক লাখ টাকা এর মধ্যে দেয়া হয়। গত শনিবার বাকি টাকা দেয়ার কথা ছিল। তা না দেয়ায় ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল করা হয়।
কানাইঘাট থানায় মঙ্গলবার সকালে নারী নির্যাতন দমন ও পর্নোগ্রাফি আইনে ওই নারী মামলা করেছেন। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, হেনস্তাকারী চারজন বৃদ্ধার ভাশুরের ছেলে ও নাতি। তাদের আসামি করা হয়েছে মামলায়।