বাংলাদেশে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ ২৯২ দশমিক ১১ ডলার। বুধবার ডলারের বিনিময় মূল্য ৮৫ টাকা ২০ পয়সা ধরলে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ২৪ হাজার ৮৭৭ টাকা ৭৭ পয়সা।
জাতীয় সংসদের চলমান অধিবেশনে বুধবার প্রশ্নোত্তর পর্বে এ তথ্য জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৈদেশিক ঋণ নিয়ে চট্টগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রীর উত্তর টেবিলে উপস্থাপন হয়।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন ঋণচুক্তির মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থের আসল পরিশোধ করার পর এ বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত মোট প্রাপ্ত বৈদেশিক ঋণের স্থিতির পরিমাণ ৪৯ হাজার ৪৫৮ ডলার।’
মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো হতে সংগৃহীত তথ্য মোতাবেক মোট জনসংখ্যা ১৬৯ দশমিক ৩১ মিলিয়নের (১৬ কোটি ৯৩ লাখ ১০ হাজার) হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ২৯২ দশমিক ১১ মার্কিন ডলার।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এই ঋণচুক্তির অধীনে ছাড়কৃত সমুদয় অর্থ চুক্তির শর্তানুযায়ী সম্পূর্ণ পরিশোধ করার পূর্ব পর্যন্ত সে চুক্তি বিদ্যমান থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী দেশ ও সংস্থার সঙ্গে এ বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত করা যেসব ঋণচুক্তি বিদ্যমান আছে তার মোট পরিমাণ ৯৫ হাজার ৯০৮ দশমিক ৩৪ মিলিয়ন ডলার। তার মধ্যে ৪৯ হাজার ৪৫৮ মিলিয়ন ডলার ছাড়কৃত ঋণ এবং ৪৬ হাজার ৪৫০ দশমিক ৩৪ মিলিয়ন ডলার ছাড়ের অপেক্ষায় আছে।’
অর্থমন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ছাড়কৃত ও ছাড়ের অপেক্ষায় থাকা ঋণ সবচেয়ে বেশি নেয়া হয়েছে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে, যার পরিমাণ ২৪ হাজার ৭২৪ দশমিক ০৬ মিলিয়ন ডলার। দ্বিতীয় স্থানে আছে উন্নয়ন সহযোগী দেশ জাপান। ঋণের পরিমাণ ১৯ হাজার ১৭৫ দশমিক ৪৯ মিলিয়ন ডলার। এর পরই এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) অবস্থান। তাদের দেয়া ঋণের পরিমাণ ১৭ হাজার ৩২৬ দশমিক ৭৩ মিলিয়ন ডলার।
করোনাকালে ঋণ বিতরণের ব্যাখ্যা
চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে করোনাকালে শিল্প খাতে ঋণ বিতরণের ব্যাখ্যা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, ‘কোভিডকালীন ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত শিল্প খাতে ঋণের প্রবাহ প্রাথমিকভাবে কমে যায়। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরে বিতরণ সামান্য বৃদ্ধি পায়।’
২০২১ সালে করোনার নেতিবাচক প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় এ বছরের মার্চ পর্যন্ত ঋণ বিতরণ আবার কমে যায় বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিভিন্ন নীতি সহায়তা ও সুবিধা প্রদান করায় শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ কোভিডকালে (২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত) বৃদ্ধি পায়নি।’
তবে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত ত্রৈমাসিকে এ ঋণের পরিমাণ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।