পাঁচ বছরের অনুসন্ধানে অবৈধ সম্পদের প্রমাণ মেলায় কেয়া কসমেটিকসের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক পাঠান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে আরও পাঁচটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
কমিশনের বৈঠকে মঙ্গলবার মামলাগুলোর অনুমোদন দেয়া হয়।
এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে আব্দুল খালেক পাঠান, তার স্ত্রী ও তিন সন্তানকে। এর আগে ২০১৭ সালে তাদের নামে ৫টি মামলা করে দুদক।
সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শফি উল্লাহ বাদী হয়ে সবশেষ মামলাগুলো করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা ১৮৩ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার ২৬৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ৯৬ কোটি ২৯ লাখ ৭২ হাজার ৭৩৯ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন বলে প্রমাণ মিলেছে।
অবৈধ সম্পদসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে আব্দুল খালেক পাঠানকে ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন দুদকের তৎকালীন অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও উপপরিচালক হারুন অর রশীদ।
২০১৭ সালের ২০ আগস্ট বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ১১১ কোটি ১৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আব্দুল খালেক পাঠান ও ছেলে-মেয়েসহ ৮ জনের নামে মামলা করেছিল দুদক। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছিল। যদিও পরে তিনি জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পান।
সবশেষ একটি মামলার এজাহারে বলা হয়, কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুল খালেক পাঠান ২০১৯ সালের ২৩ জুন দুদকে সম্পদ বিবরণী জমা দেন, যা যাচাই-বাছাই করে ৪৯ কোটি ৩৯ লাখ ৫২ হাজার ৪৮৭ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে বৈধ আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১৩৩ কোটি ৭৩ লাখ ৯ হাজার ২৪৫ টাকার সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুদক, যা অসাধু উপায়ে তিনি অর্জন করেছেন বলে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আবদুল খালেক পাঠান, তার স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় তাদের নামে আলাদা পাঁচটি সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ২৩ জুন দুদক সচিব বরাবর সম্পদ বিবরণী জমা দেন তিনি।
তার জমা দেয়া সম্পদ বিবরণী যাচাই ও অনুসন্ধানকালে সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আসামি আবদুল খালেক পাঠান তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদসহ মোট ৪৪৬ কোটি ৮৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯৩৭ টাকার সম্পদ প্রদর্শন করেছেন। কিন্তু যাচাইয়ের সময় প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে ৪৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৬ হাজার ৪২৪ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এ ক্ষেত্রে তিনি ৪৯ কোটি ৩৯ লাখ ৫২ হাজার ৪৮৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।