দেশে প্রায় ৪০০টি পত্রিকা অনিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, এগুলো ভূতুড়ে পত্রিকা। এ ধরনের পত্রিকা প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘প্রায় ৪০০ পত্রিকা চরম অনিয়মিত, যারা প্রায় দুই বছর চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরে পত্রিকা জমা দেয়নি। এগুলো ভূতুড়ে পত্রিকা, যেদিন বিজ্ঞাপন পায় সেদিন কয়েক কপি ছাপে। আর অনেকে অল্প কয়েক কপি ছেপে শুধু তথ্য মন্ত্রণালয় আর কিছু গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে দেয়।
‘ভূতুড়ে পত্রিকার কী প্রয়োজন, সেটিই প্রশ্ন এবং এগুলো বন্ধের দাবি সাংবাদিকদেরই’- যোগ করেন হাছান মাহমুদ।
এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় ঢাকা থেকে প্রকাশিত ৯টি বাংলা ও একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার ঘোষণাপত্র (ডিক্লারেশন) বাতিল করেছে সরকার।
ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে গত বুধবার পত্রিকাগুলোর ঘোষণাপত্র বাতিল করা হয় বলে মঙ্গলবার এক তথ্য বিবরণীতে জানায় তথ্য অধিদপ্তর।
ঘোষণাপত্র বাতিল করা দৈনিক পত্রিকাগুলো হলো গণ-আওয়াজ, দৈনিক জনসেবা, ঢাকা প্রকাশ, জাতির কণ্ঠ, কিষাণ, এই দেশ এই দিন, পূর্ব আলো, সময়ের পাতা ও রিপোর্টার এবং দি ফাইনান্সিয়াল ডেইলি।
এসব ভূতুড়ে পত্রিকা নিয়ে এর আগেও কথা বলেছেন তথ্যমন্ত্রী। গত ২৪ আগস্ট তথ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘এখানে নিয়োগকৃতদের বেতন দেয়া হয় না, এরা চাঁদাবাজিসহ নানা কিছুতে লিপ্ত হয় এবং সেই বদনামটা সাংবাদিক সমাজের ওপর বর্তায়, যা কখনোই সমীচীন নয়।’
ভূতুড়ে পত্রিকার পাশাপাশি ভুঁইফোঁড় নিউজ পোর্টালও বন্ধের কার্যক্রম চলছে। মঙ্গলবার এক রিটের শুনানি নিয়ে অনিবন্ধিত সব নিউজ পোর্টাল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আগামী সাত দিনের মধ্যে বিটিআরসির চেয়ারম্যান ও প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত ১৬ আগস্ট অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিকদের জন্য ‘নৈতিক নীতিমালা’ প্রণয়নে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিল আদালত।
সেই সঙ্গে ‘ন্যাশনাল অনলাইন মাস মিডিয়া পলিসি ২০১৭’ অনুযায়ী দেশে অননুমোদিত এবং অনিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকাগুলোকে কেন বন্ধের নির্দেশ দেয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা শাখা থেকে ১১ জন সাংবাদিক নেতার ব্যাংক হিসাব খতিয়ে দেখার উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পত্রিকায় এটি দেখেছি। সরকার এটি দেখতেই পারে, কিন্তু কী কারণে এটি করা হলো সে বিষয়ে আমি খোঁজ নেব।’
এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুতেও কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপির উদ্দেশ্য নির্বাচন নয়, দেশে একটি গণ্ডগোল লাগিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে কিছু করা যায় কি না, সেই অপচেষ্টা। বিএনপির জন্মটাই পেছনের দরজা দিয়ে এবং সে কারণেই তারা সব সময় পেছনের দরজা খোঁজে।
‘বিএনপি ২০১৪ সালেও নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল, ৫০০ ভোটকেন্দ্র পুড়িয়ে, নির্বাচন কর্মকর্তাসহ মানুষ পুড়িয়েও পারেনি, ভোট হয়েছে। ২০১৮ সালেও প্রথমে বয়কট ও পরে অংশ নেয় তারা। সাড়ে ১২ বছর ধরে তাদের তর্জন-গর্জন শুনে আসছি, খালি কলসি বাজে বেশি।’