চায়ের দোকানে কথা হচ্ছিল এক যুবকের মেঘনা নদীতে ৪২ কিলোমিটার সাঁতরানো নিয়ে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ৬৩ বছরের শহিদুল ইসলাম শহিদও।
শহিদ দাবি করেন, এই বয়সেও তিনি মেঘনায় একটানা সাঁতরাতে পারবেন।
তার কথায় শফিক মিয়া নামের একজন ঘোষণা দেন, শহিদ যদি মেঘনায় ১৫ কিলোমিটার একটানা সাঁতরাতে পারেন তাহলে ১ লাখ টাকা দেবেন। জালাল মিয়া নামের আরেকজনও ৫০ হাজার টাকা দেয়ার কথা জানান।
তাদের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান শহিদ। জানান, দেড় লাখ টাকা জিতলে দিয়ে দেবেন বাড়ির পাশের মসজিদ নির্মাণের কাজে।
শহিদের বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের দড়ি বালুয়াকান্দি গ্রামে। পেশায় তিনি কৃষক।
শফিক ও জালালের প্রস্তাব অনুযায়ী, সোমবার সকাল আটটায় রায়পুরার মনিপুরা ঘাট থেকে শুরু করেন সাঁতরানো। ১৫ কিলোমিটার সাঁতরে দুপুর ১২টায় পৌঁছান নরসিংদী সদরের থানার ঘাট এলাকায়।
স্থানীয় বাসিন্দা কাউসার আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই বয়সেও উনার সাহস, আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। সাঁতারের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমি নৌকায় তার পাশে ছিলাম। একবারও মনে হয়নি তিনি হাল ছেড়ে দেবেন। সাঁতার শেষে বলেন, আরও সাঁতরাতে পারবেন।’
শহিদ বলেন, ‘এভাবে সাঁতরে ভালো লাগছে। কোনো সমস্যা হয়নি। পাশে নৌকাও ছিল উদ্ধারের জন্য।
‘টাকার অভাবে এলাকার মসজিদটার ছাদ ঢালাই হচ্ছিল না। তাই পুরস্কারের পুরা টাকা মসজিদে দিয়ে দিলাম।’
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে তিনি দেড় লাখ টাকা মসজিদ কমিটিকে দিয়ে দিয়েছেন।
দড়ি বালুয়াকান্দি দক্ষিণ পাড়া জামে মসজিদ কমিটির সদস্য মিলন মিয়া জানান, তারা বিভিন্ন জনের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে মসজিদ নির্মাণ করছিলেন। টাকার অভাবে পিলারের পর আর কাজ এগোচ্ছিল না। শহিদ মসজিদের জন্য নিজের জমিও দিয়েছেন। এখন ছাদ ঢালাইয়ে পুরস্কারের পুরো টাকা দিয়ে দিয়েছেন।