বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় নিজেদের আবারও নির্দোষ দাবি করেছেন ২২ আসামী। মঙ্গলবার তাদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হলে এমন দাবি করেন।
মামলার অন্য ৩ আসামি পলাতক থাকায় তারা দ্বিতীয় দফায়ও নিজেদের নির্দোষ দাবি করতে পারেননি। ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় নিজেদের নির্দোষ দাবি করার সুযোগ তারা পেয়েছিলেন।
ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। পরে বুধবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আব্দুল্লাহ ভূঁইঞা বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরের দিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ। ওই বছরের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক ওয়াহেদুজ্জামান। গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর ২৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। মামলাটিতে ৬০ সাক্ষীর মধ্যে ৪৬ জনের সাক্ষ্যও গ্রহণ করা হয়।
গত ১৪ মার্চ এ মামলায় কারাগারে থাকা ২২ আসামি প্রথমবারের মতো আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। এরপর কয়েক আসামি নিজেদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্যও দেন। মামলায় কিছু ত্রুটি থাকায় গত ৭ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটির আরেকটি চার্জগঠনের আবেদন করে। পরদিন আদালত ২৫ আসামির বিরুদ্ধে পুনরায় চার্জগঠন করে ১৪ সেপ্টেম্বর আত্মপক্ষ শুনানির তারিখ ধার্য করেন।
আসামিরা হলেন- বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. অনিক সরকার ওরফে অপু, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন ওরফে শান্ত, আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা, উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, কর্মী মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মো. মুজাহিদুর রহমান, মো. মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, শামীম বিল্লাহ, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা, এএসএম নাজমুস সাদাত, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমত্য ইসলাম, এস এম মাহমুদ সেতু, মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মন্ডল ওরফে জিসান, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম ও মুজতবা রাফিদ। আসামিদের মধ্যে প্রথম ২২ জন কারাগারে আছেন। শেষের তিনজন পলাতক। আসামীদের মধ্যে ৮ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।