শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনার টিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত পাল্টেছে সরকার। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানিয়েছেন, টিকার নিবন্ধন করিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে পারবেন উপাচার্যরা।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ইডেন কলেজে ভবন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করলেই যদি বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হয়, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারগুলো টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হবে।
‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তাদের টেকনিক্যাল সহায়তা দেবে এবং টিকা সরবরাহ করবে। রেজিস্ট্রেশন করা শিক্ষার্থীরা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টার থেকে টিকা নিয়ে নিতে পারবে। সেখানে হয়তো আরও অর্গানাইজড ওয়েতে দেয়া সম্ভব।’
১৭ মাস পর গত রোববার থেকে স্কুল-কলেজে ক্লাস শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। তবে এতদিন সরকার জানিয়ে আসছিল, সবাইকে টিকা দেয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে চায়।
কিন্তু সবার টিকা কবে নিশ্চিত করা যাবে, সেটিই এখনও নিশ্চিত নয়। নিবন্ধন করা লাখ লাখ মানুষ এখনও টিকার তারিখ পাচ্ছে না। ফলে এই নীতি না পাল্টালে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা পিছিয়ে যেতে পারত।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকার নিবন্ধনও সহজ করা হচ্ছে। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তাদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হবে।
যাদের পরিচয়পত্র নেই, তাদের জন্য আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে একটা লিংক পাঠানো হবে। সেখানে জন্মসনদ দিয়ে নিবন্ধন করা যাবে।
যদি জন্মসনদ না থাকে, তাহলে সেটি করে নেয়া খুবই সহজ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সেটি তারা করে নেবে।’
নিবন্ধনের পর বিশ্ববিদ্যালয়সংশ্লিষ্টদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দিয়ে দেয়া হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আগামী ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হবে। যে যত আগে রেজিস্ট্রেশন করবে, তাদের আমরা তত দ্রুত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়ার চেষ্টা করব।’
বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার তারিখ এরপর জানানো হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এরপরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের সিন্ডিকেটে টিকা গ্রহণ ও কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে যখন তারা মনে করবে, এই সময় বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার তারিখ ঘোষণা করবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় খোলা নিয়ে উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউজিসির মতও এমনটিই বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা, ইউজিসির সদস্যরা, সাত কলেজের সমন্বয়ক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও জাতীয় পরামর্শক কমিটির সবাইকে নিয়ে সভা করেছি। সেখানে আমরা পর্যালোচনা করে দেখলাম আমাদের আবাসিক শিক্ষার্থীদের একটি অংশ টিকা দেয়া হয়ে গেছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের অধিকাংশের টিকা নেয়া হয়ে গেছে।
‘এখন আমাদের উপাচার্যদের যে অভিমত সেটি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা যারা তারা অন্ততপক্ষে একটি ডোজ টিকা নিতে পারে, সেখানে হল খোলা অনেক সহজ হবে।’