বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গেল জাতীয় নির্বাচনে জেতার পর সংসদে গেলে তাকে বাইরে চেঁচামেচি করতে হতো না।
ঢাকার সরকারি বাসভবন থেকে মঙ্গলবার সকালে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশ করে কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব আপনার বাইরে চিৎকার-চেঁচামেচি করার তো প্রয়োজন ছিল না। আজকে আপনি বিএনপির মহাসচিব হিসেবে সংসদে গিয়ে যদি কথা বলতেন, নির্বাচিত হয়ে যদি সংসদে আসতেন, তাহলে আপনি বিরোধী দলের কণ্ঠকে আরও সোচ্চার করতে পারতেন।
‘কিন্তু আপনি নিজেই তো আজকে দ্বিচারিতা করেছেন। একদিকে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, ওদিকে নির্বাচিত হয়েও সংসদে যাননি। আপনি নিজের দলকে সংসদে রেখেছেন, কিন্তু নিজে পদত্যাগ করেছেন। এ কোন ধরনের গণতন্ত্র।’
২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে দুটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ফখরুল। এর মধ্যে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে হারলেও জয় পান বগুড়া-৬ আসনে। ওই নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিএনপি থেকে বলা হয়েছিল, তাদের কোনো প্রার্থী শপথ নেবেন না। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নেন বিএনপি থেকে নির্বাচিত পাঁচ প্রার্থী। তবে ফখরুল শপথ নেননি।
আওয়ামী লীগ সরকার ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠেছে বলে বিএনপি নেতাদের মন্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিই ফ্যাসিবাদের পতাকা বহন করে।
তিনি বলেন, ‘আসলে ফ্যাসিবাদ হচ্ছে একটি মানসিকতা। বিএনপির অবাধ মিথ্যাচার ফ্যাসিবাদী মানসিকতার অংশ। তাদের শাসনামলেই তারা ফ্যাসিবাদ চর্চা করেছিল। আমাদের ২১ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছিল। তারা দেশের মাইনরিটি সম্প্রদায়কে নির্যাতন করেছিল। ছিল না ন্যূনতম গণতন্ত্র।’
সরকারকে ফ্যাসিবাদী বলার আগে বিএনপিকে আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখার পরামর্শ দিয়ে ক্ষমতাসীন দলের কাদের বলেন, ‘দেখতে পাবেন নিজেরাই ফ্যাসিবাদের উত্তরাধিকার বহন করছে এবং তাদের মাঝে বিরাজ করছে ফ্যাসিবাদী মানসিকতা।’
কর্মী-সমর্থকদের ধাঁধার মধ্যে রেখে বিএনপি নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে চায় বলে মন্তব্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের। বলেন, ‘তারা বলেন, তারা নাকি কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন না। প্রতিদিন তাদের বক্তব্য পত্রিকায়, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় আসছে, সংসদে আসনসংখ্যা অনুযায়ী প্রাপ্ত সময়ের বেশি সময় দেয়া হচ্ছে। তাও বলেন কথা বলার সুযোগ সীমিত করা হচ্ছে।’
নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে সরকার দমন-পীড়ন চালাচ্ছে বলে বিএনপির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার দমন-পীড়নে বিশ্বাসী নয়, বিএনপি নেতারা প্রতিদিনই সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে। অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। তারপরও কারও বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
বিএনপি ‘যা খুশি তাই বলে বেড়াচ্ছে’ বলেও মন্তব্য কাদেরের। তিনি বলেন, ‘গঠনমূলক সমালোচনাকে আমরা সব সময় স্বাগত জানাই, কিন্তু সমালোচনার নামে আপনারা করে চলেছেন অন্ধ বিষোদগার।’